ঘরে কুপি জ্বালিয়ে মা গেলেন বাইরে, ঘুমন্ত শিশু পুড়ল আগুনে
বরগুনার তালতলী উপজেলায় বসতঘরে লাগা আগুনে পুড়ে জুনায়েদ (৬) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে শিশুটির বড় ভাই মো. জাবের (১৫) দগ্ধ হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অঙ্কুজানপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া মো. জুনায়েদ ও দগ্ধ মো. জাবের ওই গ্রামের কালাম গাজীর ছেলে।
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে কালাম গাজীর বসতঘরে আগুন লাগার দ্রুতই তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তখন ঘরে জুনায়েদ ও জাবের—দুই ভাই ঘুমিয়ে ছিল। আগুনের তাপে মো. জাবের দগ্ধ অবস্থায় ঘর থেকে বের হতে পারলেও শিশু জুনায়েদ পারেনি। শিশুদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে শিশু জুনায়েদের লাশ উদ্ধার করে।
মারা যাওয়া শিশুটির মা কুলছুম বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরে কুপি জ্বালিয়ে রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যাই। এ সময় ঘরে জুনায়েদ ও জাবের ঘুমানো ছিল। কিছুক্ষণ পরে ঘরে আগুন দেখতে পাই। আমার বুকের মানিক হারিয়ে গেছে। নিষ্ঠুর আগুন আমার সব কেড়ে নিয়েছে।’
তালতলী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে রওনা দিলেও তালতলী শহরে দুটি নির্বাচনী পথসভার কারণে সড়কে অতিরিক্ত যানজট থাকায় ঘটনাস্থলে পৌঁছতে বেগ পেতে হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় একটি দগ্ধ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আমরা সহায়তা দেব।’