সরকারের কাছে ত্বকী হত্যার বিচার চাইলেন মেয়র আইভী
ত্বকী হত্যাকারীরা যতই প্রভাবশালী হোক, সরকারের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। ত্বকী হত্যার ১১ বছর পূর্ণ উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার মোল্লাবাড়ি এলাকায় সিরাজ শাহর আস্তানায় ত্বকীর কবরে ফুল দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই দাবি জানান।
মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘ত্বকী হত্যা আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা। সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী সবাই জানে ত্বকীকে কেন, কী কারণে হত্যা করা হয়েছিল? নারায়ণগঞ্জবাসীসহ সবার কাছে জোর দাবি, আমাদের ন্যায্য চাওয়া ছিল, ত্বকী হত্যার বিচার দ্রুত করা। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে সব প্রকার প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচার কার্যটি শুরু করা হচ্ছে না। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব, যত প্রভাবশালী হোক না কেন, প্রকৃত খুনি বের করার জন্য, ত্বকী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
এর আগে ত্বকীর কবরে ফুল দেন ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, খেলাঘর আসরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, ফারুক মহসিন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর জেলা শাখার সভাপতি জাহিদুল হক, সমমনা–এর সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ সাহা, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিখিল দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা শাখার সভাপতি ধীমান সাহা, প্রথম আলো নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল উচ্ছ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সামাজিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে সেলিম ভূঁইয়া, গণসংহতি আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচারের দাবি জানিয়ে প্রতি মাসের আট তারিখে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। ১১ বছরেও বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়। তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতারা বিচার চেয়ে আসছেন। কিন্তু হত্যার বিচার করা তো দূরে থাক, উল্টো ঘাতকদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সরকার। তদন্ত সংস্থা অভিযোগপত্র প্রস্তুত করলেও তা আদালতে দাখিল করেনি।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নগরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। পরে ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ত্বকী হত্যা মামলার ১১ বছর পূর্তিতে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ।