রাজশাহীতে গাড়ি বহরে হামলা
অভিযোগ ছিল বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে, মামলার আসামি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা
রাজশাহীর তানোরে বিএনপির এক পক্ষের ওপর হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে অপর পক্ষের নেতাকে অভিযুক্ত করে তাঁর বহিষ্কার দাবি করা হয়েছিল। ওই ঘটনার আট দিন পর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়। তবে বিএনপি নেতাকে নয়; আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম ১৫ ডিসেম্বর ১৩ থেকে ১৪টি মাইক্রোবাস নিয়ে তানোর সদরে আসেন। সেদিন তাঁর বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরের আলকার মোড়ের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন সুলতানুলের অনুসারীরা। সেখানে তাঁরা বিএনপি নেতা ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে করেন এবং তাঁকে বহিষ্কারের দাবি জানান। মিজানুর রহমান অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিনের অনুসারী।
১৮ ডিসেম্বর দুপুরে তানোর বিএনপির কার্যালয়ে মিজানুর রহমানের অনুসারীরা সুলতানুল ইসলামের বহিষ্কার দাবিতে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর সুলতানুলের সমর্থক বিএনপির নেতা সেলিম রেজা বাদী হয়ে তানোর থানায় একটি মামলা করেন।
এ মামলায় মিজানুর রহমান বা তাঁর অনুসারী কাউকে আসামি না করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে সোহেল রানাকে (৪২)। তিনি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। ২ নম্বর আসামি তানোর পৌর যুবলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম (৪০)। ৩ নম্বর আসামি আওয়ামী লীগ সমর্থক তৌহিদুল ইসলাম। ৪ নম্বর আসামি কামারগাঁ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তোফায়েল হোসেন (৪২)। এ ছাড়া মামলার ৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামালকে (৪২)।
সংবাদ সম্মেলনে হামলার বিষয়ে বিএনপি নেতাকে অভিযোগের পর মামলা করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীদের।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী সেলিম রেজা বলেন, মামলার আসামিদের কাউকে চেনেন না তিনি। তানোরে তাঁদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা যাঁদের নাম–পরিচয় দিয়েছেন, কেবল তাঁদেরই আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামি কামারগাঁ ইউপির চেয়ারম্যান শফি কামাল বলেন, ‘শুনেছি বেশ কয়েক দিন আগে শোডাউন নিয়ে বিএনপির মিজানপক্ষ আর তারেকপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি, বিএনপির মাইক্রোবাস শোডাউনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমাদের আসামি করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, মামলা তদন্তাধীন। তদন্তে যা পাওয়া যায়, সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।