বসতঘরে ঢুকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, নারী আটক
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক চেয়ারম্যানের ঘরে ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বালাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ওই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকে (৩২) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে নিহত নারীর পরিবার। পুলিশ জানায়, আটক করার সময় ওই নারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজের গলায় আঘাত করেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হয়েছে।
নিহত নারীর নাম লুৎফা বেগম (৬৫) চরসেনসাস ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রফিক বালার স্ত্রী। আটক নারী তাঁদের পূর্বপরিচিত ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে বালাকান্দি গ্রামে লুৎফা বেগমের সঙ্গে গল্প করতে করতে চা পান করছিলেন ওই নারী। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ আদায় করতে বাড়ির পাশের মসজিদে যান লুৎফা বেগমের স্বামী রফিক বালা। লুৎফাও সেখান থেকে উঠে নিজের ঘরে নামাজ পড়তে যান। ওই নারী ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে লুৎফার গলা কেটে দেন। লুৎফার চিৎকার শুনে পুত্রবধূ আফরোজা আক্তার সেখানে ছুটে যান। তখন তাঁকেও আক্রমণের চেষ্টা করেন ওই নারী। পরে পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে আটক করার চেষ্টা করেন। তখন তিনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজের গলা কাটার চেষ্টা করেন। আহত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে ঘটনাস্থলেই লুৎফা বেগমের মৃত্যু হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের কারণ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারছেন না লুৎফার স্বজনেরা। তাঁর স্বামী রফিক বালা বলেন, ‘আমার কোনো শত্রু নেই। আর আমার স্ত্রী তো কারও সঙ্গে বিরোধ বা দ্বন্দ্ব করতে যায় না। সে সংসারী নারী। কেন এবং কী উদ্দেশ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বুঝতে পারছি না। আমি কখনো কল্পনাও করিনি, বসতঘরে প্রবেশ করে আমার স্ত্রীকে কেউ এভাবে হত্যা করতে পারে।’
গতকাল রাতে লুৎফার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে জানান, সন্দেহভাজন হত্যাকারী পালানোর সময় ধরা পড়েছেন। তিনি নিজেই গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই নারী সুস্থ হয়ে উঠলে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।