আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছিল বরিশাল-৫ (সদর) আসন ঘিরে। বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন ঘিরে এই উত্তাপ ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এতে সাদিক আবদুল্লাহর কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
বরিশাল-৫ আসনে মনোনয়ন নিয়ে জাহিদ ফারুকের বিপরীতে ব্যাপক তৎপর ছিলেন সাদিক আবদুল্লাহ। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা খুবই হতাশ ছিলেন। এ হতাশা কাটিয়ে সাদিক আবদুল্লাহ রাজনীতিতে নিজের প্রভাব, বলয় ও কর্তৃত্ব ধরে রাখতে সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে নানা তৎপরতা চালান। কিন্তু এবারও তাঁর ভাগ্যে জোটেনি দলীয় মনোনয়ন। ফলে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা চুপসে গেছেন। হতাশ হয়ে পড়েছেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মনোনয়ন ঘোষণার পর সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন না পাওয়া এবং জাহিদ ফারুকের আবার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে নগরের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে নানা আলোচনা চলে। কেউ কেউ বলছেন, বিগত দিনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণেই এবারও মনোনয়ন পাননি সাদিক আবদুল্লাহ। আবার কেউ বলছেন, সদর আসনে গত পাঁচ বছরে জাহিদ ফারুক সংসদ সদস্য হিসেবে ভালো কাজ করেছেন এবং বিতর্কও সৃষ্টি করেননি। ফলে দল তাঁকে মূল্যায়ন করেছে।
সাদিক আবদুল্লাহ গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাঁর ছোট চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পেলেন না। সাদিক আবদুল্লাহর কর্মী-সমর্থকেরা মনে করেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবুল খায়ের আবদুল্লাহর দলীয় মনোনয়ন পাওয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনে তাঁকে বিজয়ী করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এবার সাদিক আবদুল্লাহ নগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের কমিটিতে নিজের লোকজন বসিয়ে রাজনীতির মাঠ গুছিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বরিশালে রাজনীতির মাঠ থেকে তিনি পিছিয়ে পড়লেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজালুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগেই নিশ্চিত ছিলাম, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিতর্কিত কাউকে এবার মনোনয়ন দেবেন না। আমাদের সেই ধারণা শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছে।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, বরিশালে আওয়ামী লীগের কমিটির বাইরে থাকা অংশটি এখানে অনেক বেশি শক্তিশালী। তাদের সাংগঠনিক শক্তির প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে। ফলে দলীয় প্রার্থীর প্রতি ভোটাররা ইতিবাচক বলেই মনে হয়।