নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও জরিমানা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীকে মারধর, উপাসনালয়ের সামনে মারামারি এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের পৃথক ঘটনায় ২৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও আর্থিক জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবদুল বাকী স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে এ শাস্তির কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের সামনে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি হিসেবে তিন শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য ও এক শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার এবং ১৩ শিক্ষার্থীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন বিবিএ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আরাফাতুল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে আল আমিন ব্যাপারী ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রূপক পাল। বহিষ্কারের পাশাপাশি তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে শাহনেওয়াজ নামের আরেক শিক্ষার্থীকে। তিনি ফলিত গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

একই ঘটনায় বিবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. শাহরিয়ার আকবর, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ (বিএমএস) বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তানভীর হোসেন, শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান, ফলিত গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এস এম মশিউর রহমান, পরিবেশবিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আমিনুর রহমান ওরফে পিয়াল, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিই) বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফুল হক, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস কবির, আইসিই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তানভীর আহমেদ ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ওমর ফারুককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

এ ছাড়া ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের নজরুল ইসলাম নাঈমকে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছে।

এদিকে গত বছরের ২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাসনালয়ের সামনে মারামারি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মৃন্ময় কৃষ্ণ সাহাকে এক বছরের জন্য এবং চলতি বছরের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তৌসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনায় একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামিম ইবনে মাহবুব, মেহেদী হাসান এবং শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাইম মোস্তফাকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় বিভিন্ন বিভাগের ৬ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তাঁরা হলেন মাহাদী হাসান, ফার্মেসি বিভাগের মো. রায়হান মাহমুদ, আইসিই বিভাগের আবদুল বাসেদ ইমন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসটিই) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম, মৎস্য ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শাহানারা আক্তার ও ইংরেজি বিভাগের অঙ্গন বড়ুয়া।

দাপ্তরিক আদেশে বলা হয়েছে, উল্লেখিত ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে বহিষ্কার ও জরিমানার বিষয়ে নিশ্চিত হতে আজ শুক্রবার সকালে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবদুল বাকীকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ইকবাল হোসেন ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদের বহিষ্কার এবং জরিমানার বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন।