নাটোরে প্রণোদনা না পেয়ে নারী কৃষি কর্মকর্তার মাথায় আঘাত করার অভিযোগ

সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান। বৃহস্পতিবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

নাটোরে সরকারি প্রণোদনা না পেয়ে এক নারী কৃষি কর্মকর্তাকে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে এক কৃষকের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের একডালা নারায়ণপাড়া মাঠে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কৃষকের নাম মো. মিলন। তিনি একডালা এলাকার বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আহত কৃষি কর্মকর্তার নাম ইসরাত জাহান (৩২)। তিনি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে কর্মরত। বর্তমানে নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান গতকাল দুপুরে নারায়ণপাড়া মাঠে এক কৃষকের ফসলি জমি দেখতে যান। তখন কৃষক মিলন তাঁর কাছে এসে জানতে চান, কেন তিনি এবার কৃষি প্রণোদনা পাননি। কৃষি কর্মকর্তা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, যাঁরা একবারও প্রণোদনা পাননি, তাঁদের দেওয়ার পর আবার তাঁকে দেওয়া হবে। এতে ওই কৃষক ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ওই কর্মকর্তার মাথায় বাড়ি মারেন। এতে ওই কর্মকর্তার মাথা ফেটে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

কৃষি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মাঠ পরিদর্শনে গেলে কৃষক মিলন রাগান্বিত হয়ে আমার সঙ্গে তর্কে জড়ান। তিনি আগে থেকেই আমার ওপর হয়তো ক্ষুব্ধ ছিলেন। কারণ, বরাদ্দ কম থাকায় আমি তাঁকে এবার কৃষি প্রণোদনার উপকরণ দিতে পারিনি। এ জন্য তিনি রড দিয়ে আমার মাথা ফাটাবেন, তা ধারণা করতে পারিনি। আমি ওই কৃষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অন্যথায় কোনো কৃষি কর্মকর্তা কৃষকের মাঠে যেতে পারবেন না।’

অভিযুক্ত কৃষক মো. মিলন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তার স্বামী মো. রানার কাছে আমি টাকা পাব। টাকার কথা বললে তিনি গালিগালাজ করতে শুরু করেন। তখন রাগ করে আমি ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা এক শ্রমিকের ব্যাগ তার দিকে ছুড়ে মারি। ব্যাগে শক্ত কিছু ছিল, তাতে তাঁর মাথা কেটে যায়। আসলে আমি তাঁকে মারার উদ্দেশ্যে মারিনি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মো. আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি মৌখিকভাবে শুনেছেন। কৃষি কর্মকর্তারা লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসার কথা জানিয়েছেন। মামলা হবে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।