বগুড়ার পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগের যাত্রা শুরু

বগুড়ার পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে এলএলবি ও জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের যাত্রা শুরু উপলক্ষে মতবিনিময় সভা। শনিবার বিকেলে হোটেল মম ইন পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টে
ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে যাত্রা শুরু করেছে এলএলবি ও জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ইতিমধ্যে এই নতুন দুটি বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়ায় ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন দুটি বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ শনিবার বগুড়ার আইনজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

বিকেল চারটায় হোটেল মম ইন পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টের দ্য ট্রেড সেন্টার কনভেনশন হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহজাহান কবির। পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে-আরা বেগম।

বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম তাসকিনুল হক, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম আফজাল হোসেন, ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহসভাপতি ফজলুর রহমান, আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শওকত আলম মীর, পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, বগুড়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আতাউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জহুরুল হক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিশেষ পিপি মোজাম্মেল হক, দৈনিক বগুড়ার নির্বাহী সম্পাদক রেজাউল হাসান, এটিএন নিউজের ব্যুরো প্রধান চপল সাহা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. জহুরুল ইসলাম।

পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা ও আইন দুটি বিষয় যাত্রা শুরু করছে। ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর জন্য গণমাধ্যমের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকতে হয়। এ দেশে ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা যথাযথ ছিল না।
হোসনে-আরা বেগম, চেয়ারম্যান, পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রাস্ট

অনুষ্ঠানে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আইন অনুষদকে শহীদ আইনজীবী আবদুল জব্বারের নামে নামকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বগুড়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহজাহান কবির বলেন, সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর পাহারাদার। অন্যদিকে আইনপেশা সমাজের মহৎ পেশা। সাংবাদিকতা এবং আইন বিষয় চালু পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির অনন্য উদ্যোগ। আইন বিষয়ে অতিথি শিক্ষকের আমন্ত্রণ পেলে জেলা বিচারকেরা সহায়তা করবেন।

এ এস এম তাসকিনুল হক অনুষ্ঠানে বলেন, সাংবাদিকতা ও আইন দুটি বিষয় সমাজ বিনির্মাণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকেরা সমাজের দর্পণ এবং আইনজীবীরা সমাজের প্রকৌশলী। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন দুটি বিষয় চালু সাংবাদিকতা ও আইন পেশার উৎকর্ষ সাধন করবে।

মোজাম্মেল হক বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানেই টাকার বিনিময়ে সনদের কারবার—এমন অপবাদ আছে। পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি যেন সনদ কারবারের চোরাবালিতে হারিয়ে না যায়। শিক্ষার গুণগত মান যেন ঠিক থাকে।

পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হোসনে-আরা বেগম বলেন, পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা ও আইন দুটি বিষয় যাত্রা শুরু করছে। ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর জন্য গণমাধ্যমের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকতে হয়। এ দেশে ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা যথাযথ ছিল না।

উপাচার্য অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র বলেন, ‘এই অঞ্চলে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকেই পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির যাত্রা শুরু করে। এ অঞ্চলের অসচ্ছল পরিবারের মেধাবীরাও যাতে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা পাল্টে দিতে চায় পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়। এ জন্য গবেষণা, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করছি আমরা।’

ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়–সংলগ্ন বগুড়া শহর থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের গোকুল এলাকায় ৮ একর জায়গাজুড়ে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ২১ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম। বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট সদস্যসংখ্যা ১২।