রাজশাহীতে কাজেমের খুনিদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের সময়সীমা বেঁধে দিলেন চিকিৎসকেরা
রাজশাহীতে চিকিৎসক গোলাম কাজেম আলীকে (৪২) হত্যার ঘটনায় খুনিদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) রাজশাহী শাখার উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে রাজশাহী বিএমএর সভাপতি এ বি সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি চিন্ময় কান্তি দাস, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি খলিলুর রহমান, রাজশাহী বিএমএর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসক অংশ নেন।
নিহত চিকিৎসক গোলাম কাজেম আলী চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। গত রোববার রাতে চেম্বার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে গতকাল সোমবার প্রাইভেট ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখেন রাজশাহীর চিকিৎসকেরা।
আজ মানববন্ধনে অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বলেন, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ঘাতকদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতককে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
রাজশাহীর মেডিকেল কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কাজেম আলী। পরে তিনি নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। প্রতিদিনের মতো রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাঁর চেম্বার শেষে উপশহরের বাড়িতে ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ শাহীনুজ্জামান। শাহীনুজ্জামান ওই চিকিৎসকে মাঝেমধ্যে বাড়িতে মোটরসাইকেলে করে পৌঁছে দিতেন। সেদিন রাতেও তাঁরা দুজন একত্রে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বর্ণালীর মোড়সংলগ্ন কলাবাগান এলাকার নির্জন সড়কে একটি মাইক্রোবাসে করে তাঁদের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে একদল দুর্বৃত্ত। তারা শাহীনুজ্জামানকে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে বলে। এরপর কাজেম আলীর বুকে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
পরে রাস্তা থেকে কাজেম আলীকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান শাহীনুজ্জামানসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। রাত দুইটার দিকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত গোলাম কাজেম আলীর স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন বাদী হয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে নগরের রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।