পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, উত্তপ্ত কোনাবাড়ী
গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী এলাকায় দুপুরের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনরত পোশাকশ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তুসুকা গ্রুপের একটি কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর করেন শ্রমিকেরা। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর কোনাবাড়ী বিসিক এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখান থেকে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে উত্তেজিত শ্রমিকেরা কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা কারখানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র্যাবের একাধিক দল টহল দিচ্ছে। সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন শ্রমিকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের কোনাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে মজুরি বোর্ড ঘোষিত সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান করে সকালে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকেরা। সকাল আটটার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা-শিববাড়ি সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকেরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকেরা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর দুপুরের খাবার বিরতি পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল।
দুপুরের খাবার বিরতির পর শ্রমিকেরা আবার আন্দোলনে নামেন। প্রথমে কোনাবাড়ী বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করেন। এরপর মিছিল করতে করতে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তুসুকা গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরাও রাস্তায় নেমে আসেন। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
র্যাব–১-এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন বলেন, শ্রমিকদের প্রথমে শান্ত থাকার অনুরোধ করে র্যাব। কিন্তু শ্রমিকেরা অনুরোধ উপেক্ষা করে আন্দোলনের নামে নাশকতামূলক কাজ শুরু করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আবু তোরাফ মো. শামসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কোনাবাড়ী এলাকায় ভাঙচুরের পর অনেক শ্রমিক আটকা পড়েছেন। এখন তাঁদের বের করে দেওয়া হচ্ছে।