শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে প্রথম বর্ষে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম চলছিল। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

গুচ্ছভুক্ত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) পঞ্চমবারের মতো ডোপ টেস্টের মাধ্যমে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম চলছে। ১ হাজার ২৫০ শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত ভর্তির জন্য আজ ডাকা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বি ইউনিট (মানবিক) ও সি ইউনিটের (বাণিজ্য) শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত ভর্তি নেওয়া হবে।

ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রেজা সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগে যাঁদের রক্তের গ্রুপ জানা নেই, তাঁদের রক্তের গ্রুপও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ডোপ টেস্ট করে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল দেওয়া হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১৪০ শিক্ষার্থীর ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে কারও ফলাফল পজিটিভ হয়নি।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো ডোপ টেস্ট চালু করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত কি না, তা দেখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডোপ টেস্ট কমিটির সদস্য ও সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লা আল সোয়েব বলেন, ‘ডোপ টেস্টের চারটি ক্যাটাগরি রয়েছে। এর মধ্যে বেনজুডাইয়াজিপাইন অন্তর্ভুক্ত স্লিপিং পিল, মারিজুয়ানা (গাঁজা), ইয়াবা ও আফিম। স্লিপিং পিলের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী গ্রহণ করা হলে, তা গ্রাহ্য করা হচ্ছে। তবে তা মাত্রাতিরিক্ত হলে শিক্ষার্থীর তথ্যগুলো আমরা কাউন্সিল টিম ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে পৌঁছে দেব। পরে ওই শিক্ষার্থীকে কাউন্সেলিংয়ে রাখবে তারা অথবা পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হবে।’

স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিসের’ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তিসম্পন্ন হচ্ছে বলে জানান ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আবু সাঈদ আরফিন খান। তিনি বলেন, সাতটি স্তরে শিক্ষার্থীদের ভর্তি সম্পন্ন হচ্ছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীর রক্ত পরীক্ষা, ডোপ টেস্ট, স্বাক্ষর যাচাই, তথ্য যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন প্রদান, ভর্তি ফি গ্রহণ, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন যাচাই, হল সংযুক্তি প্রদান ও হলের আসন বণ্টনের আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি ঘণ্টায় ১০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীর ভর্তি সম্পন্ন হচ্ছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষা করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্তদানবিষয়ক সংগঠন ‘সঞ্চালন’-এর সদস্যেরা। এ ছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) শাবিপ্রবি প্লাটুনের সদস্যেরা ভর্তি-ইচ্ছুকদের সার্বিক সহযোগিতায় কাজ করছেন।

ভর্তির আগে শিক্ষার্থীদের মাদকাসক্তি পরীক্ষার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। সন্তানকে ভর্তি করতে সুনামগঞ্জ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আসেন সরকারি চাকরিজীবী নূর আলী। তিনি বলেন, আজকের পরিবেশ চমৎকার। সমস্যা নেই। বিশেষ করে ভর্তি পদ্ধতিটি ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশেও সুন্দর। অভিভাবকদের জন্য বসার জায়গা করা হয়েছে।

এ দিকে সদ্য ভর্তি হওয়া ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, ‘ভর্তি সম্পন্ন করতে ভোগান্তি নেই, খুবই ভালো লাগল।’