বিদ্যুতের শক নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো হাসপাতালের বারান্দায় বানর
গায়ে বৈদ্যুতিক শকের ক্ষত নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছে অসুস্থ একটি বানর। আজ রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে বানরটি চিকিৎসা নিতে এলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা প্রাণীটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
তবে বানরটির চিকিৎসায় এগিয়ে আসেননি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের পশুচিকিৎসকেরা। তাঁরা তাকিয়ে আছেন বন বিভাগের দিকে। বন বিভাগ বলছে, যেহেতু বানর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসে আছে, মানুষের কাছেই ধরা দিচ্ছে। পশুচিকিৎসকেরা গিয়ে বানরটির চিকিৎসা দিতে পারেন।
যন্ত্রণায় কাতর বানরটির শরীরের পেছনের অংশের ক্ষতে ধীরে ধীরে পচন ধরছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ প্রথম আলোকে বলেন, বানরটি গতকালের মতো আজ বিকেলেও হাসপাতালের বারান্দায় হাজির হয়। গতকাল শনিবার একই সময়ে ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে বারান্দায় প্রথম এসেছিল। তাঁরা গতকাল প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছিলেন। এরপর বানরটি ধীরে ধীরে হাসপাতালের পাশের বাগানে বনে চলে যায়।
নুর উদ্দিন রাশেদ আরও বলেন, গতকাল বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁরা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পশু চিকিৎসকদের বিষয়টি জানান। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা প্রাণীটিকে ধরে দিতে বন বিভাগকে জানাতে বলেন। পরে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিনকে বিষয়টি জানানো হয়। আজ বিকেলে বানরটি আসার পর আবার তিনি প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পশুচিকিৎসক ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
বানরটিকে হাসপাতাল এলাকায় আগেও দেখা গিয়েছিল। দুই সপ্তাহ আগেও বানরটি হাসপাতাল এলাকায় এসেছিল। সে সময় বানরটিকে কিছু খাবারদাবার দেন হাসপাতালের লোকজন। তখন বানরটি সুস্থ ছিল। খাদ্যসংকটের কারণে বন থেকে লোকালয়ে চলে আসে বানরটি। অসুস্থ হওয়ার পর বানরটি হাসপাতালের বারান্দার সিঁড়িতে এসে বসে। রোগীরা আসা-যাওয়া করলেও সে সিঁড়ি থেকে সরছিল না। বানরটির পেছনের অংশে খুব সম্ভবত বৈদ্যুতিক শক লেগেছে।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গতকাল বিষয়টি জানানোর পর বানরটিকে ধরে দেওয়ার জন্য বন বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি অনুরোধ করেন। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত বানরটিকে ধরে দেননি। বনের ক্ষতিগ্রস্ত প্রাণীদের একরকম মালিক বলতে হয় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের। তাঁরা বন কর্মকর্তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।
উপকূলীয় বন বিভাগের সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, একটা অসুস্থ প্রাণী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে। মানুষের কাছে প্রাণীটি চিকিৎসাসেবা চাইছে। যে কেউ প্রাণীটিকে ধরতে পারছে। অথচ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা ১০০ মিটার পথ গিয়ে প্রাণীটির সেবা দিতে পারছেন না।