সুবর্ণচরে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে রাস্তায় কয়েক শ মানুষ
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংস ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক শ মানুষ। তাঁরা এ সময় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে নারী ও শিশুর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনার নিন্দা জানান। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে সুবর্ণচরের মুজিব চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে নোয়াখালী নারী অধিকার জোট। এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে উপস্থিত হন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চর ক্লার্ক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল বাশার, নারী অধিকার জোটের সদস্যসচিব মনোয়ারা আক্তার ওরফে মিনু, মানবাধিকার কর্মী ও নোয়াখালী সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য রৌশন আক্তার, উন্নয়ন সংগঠন নিজেরা করির অঞ্চল সমন্বয়ক পরিতোষ দেবনাথ, সুবর্ণ ক্যাডেট একাডেমির প্রধান শিক্ষক হানিফ মাহমুদ, নারী অধিকার জোটের সদস্য মারজাহান আক্তার, মেরিনা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, একের পর এক নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সুবর্ণচর আজ সারা দেশের কাছে আলোচিত এক নাম। কতিপয় মানুষের ঘৃণিত আচরণের কারণে সবুজ-শ্যামল জনপদটি নারী ও শিশুদের কাছে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার বিচারের রায়ের দিনই আরেকটি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সারা দেশের মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। একটি শান্ত ও সমৃদ্ধ জনপদের নারী ও শিশুদের কতিপয় মানুষের কাছে জিম্মি হতে দেওয়া যাবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব সামাজিক অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
৫ বছর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে ৪০ বছর বয়সী এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও মারপিটের অভিযোগে মামলা হয়। ওই নারীর অভিযোগ ছিল, পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় তাঁর ওপর ওই নির্যাতন চালানো হয়েছে। ওই ঘটনার পর আরও কয়েকটি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে সুবর্ণচরে।
আলোচিত ওই ঘটনার বিচারের রায়ে ৫ ফেব্রুয়ারি ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক। ওই রায়ের দিন দিবাগত রাতে একই উপজেলার আরেক নারী ও তাঁর স্কুলপড়ুয়া কিশোরী মেয়েকে বসতঘরের সিঁধ কেটে ভেতরে ঢুকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়।