ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা তরুণ বললেন, ‘পেছনে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি’
‘আমি পেছনের সিটে বসেছিলাম। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ ধাক্কা ও বিকট শব্দে জেগে উঠি। মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা পাই। পেছনের সিটে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেঝেতে শুয়ে এভাবেই ভয়াল সেই ঘটনার বর্ণনা দেন তানভির হাসান ওরফে হৃদয় (১৮)। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ। চোখের ওপরে সেলাই পড়েছে তাঁর।
আজ শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া স্টেশনে ঢোকার আগে পূর্ব খৈয়াছড়া এলাকায় চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী নিহত হন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ছয়জন। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে চালক ও তাঁর সহকারী ছাড়া সবাই হাটহাজারীর ‘আরএনজে কোচিং সেন্টার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ও শিক্ষক। এসএসসি ২০২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে তাঁরা মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তাঁরা দুর্ঘটনায় পড়েন।
আহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মাইক্রোবাসের সহকারী তৌকির ইবনে শাওন (২০), আয়াত (১৬), মো. মাহিন (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভির হাসান (১৮) ও মো. ইমন (১৯)।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইমনকে সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নোমান খালেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তানভির নামের ছেলেটি একটু ভালো আছে। তাঁদের সিটি স্ক্যান করার পর পরবর্তী চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে।
তানভিরের পাশে মেঝেতে একে একে শুয়ে আছেন আয়াত, সৈকত ও তৌকির। তাঁরা সংজ্ঞাহীন। সবার মাথায় ব্যান্ডেজ। এ ছাড়া হাত-পাসহ বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে তাঁদের। উদ্বিগ্ন স্বজনেরা ভিড় করেছেন শয্যাপাশে।
তানভিরের মা লাকী আকতার ছেলের শয্যাপাশে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। আস্তে আস্তে কথা বলছেন উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র হৃদয়। তানভির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে বেড়াতে গিয়েছিলাম খৈয়াছড়া ঝরনায়। আমরা পেছনে চারজন বসেছিলাম।’ লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান ছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়িতে বমি হয় বলে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।