অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে খাগড়াছড়ি শহরের পরিস্থিতি। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে পৌর এলাকা থেকে ১৪৪ ধারাও প্রত্যাহার করেছে প্রশাসন। শহরেরর বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। নানা কাজে লোকজনও ঘর থেকে বের হচ্ছেন।
১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে বেলা ৩টার সময় ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবারের সহিংসতার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা ও ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা। ধর্ষণ মামলাটি করেছেন ঘটনার শিকার ছাত্রীর মা। অপর মামলার বাদী পুলিশ।
আজ সকাল থেকে খাগড়াছড়ি শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সকালে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় অল্প কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে পানছড়ি-খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল করেনি।
গতকাল এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে (৪৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এ সময় সদরের মহাজনপাড়া, পানখাইয়াপাড়া সড়কের চাইহ্লাউ পাড়ার কয়েকটি দোকান ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নিহত সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সদরের খেজুরবাগান এলাকায় অবস্থিত। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সোহেল রানা কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। একই প্রতিষ্ঠানে তিনি যেন আবার যোগদান করতে না পারেন, সেই দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছিল। এরপর গতকাল আবার তাঁর বিরুদ্ধে অপর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, সকালে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।