নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ছেলের বিরুদ্ধে মুঠোফোন চুরির অভিযোগ তুলে মাকে লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের নামে। পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে এক সালিস বৈঠকে এ ঘটনা ঘটলেও আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই নারীকে পেটানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম আইয়ুব আলী। তিনি উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
এক মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি আজ একটি আইডি থেকে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়ং। এর পর থেকেই এটি ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, সালিসে ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী আনুমানিক ৩৫ থেকে ৩৬ বছর বয়সী এক নারীকে জিজ্ঞাসা করছেন তাঁর ছেলে যে মুঠোফোনসহ বিভিন্ন জিনিস চুরির সঙ্গে জড়িত, তা তিনি জানেন কি না। ওই নারী জবাব দেন, তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না। আবারও ওই নারীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি তাঁর ছেলেকে চুরি করতে বলেছেন কি না। ওই নারী পুনরায় ‘না’ জবাব দিলে সালিসে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি বলে ওঠেন, সে (ওই নারী) সব জানে। এ সময় ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বসা থেকে দাঁড়িয়ে একটি লাঠি দিয়ে ওই নারীকে সবার সামনে পেটাতে থাকেন। পাশে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘মহিলা মানুষ, মারার দরকার নাই’। ওই নারীও বলতে থাকেন, তিনি কিছুই জানেন না। এরপরও তাঁকে পেটাতে থাকেন আইয়ুব আলী।
ভুক্তভোগী নারীর স্বামী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিএনপির সমর্থক। তাঁর বাড়ির আশপাশের সবাই আওয়ামী লীগের। ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ভয়ে তখন এ ঘটনার প্রতিবাদ করেননি কেউ। তিনিও প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে চুরির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীসহ সবার শাস্তি দাবি করেন।
জানতে চাইলে ওই নারীকে পেটানোর সত্যতা স্বীকার করেন ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, ওই নারী সম্পর্কে তাঁর ভাতিজার স্ত্রী। ওই নারীর ছেলের বিরুদ্ধে প্রায়ই বিভিন্ন চুরির অভিযোগ শোনা যায়। তাই নিজেদের মানসম্মান রক্ষা করতে তিনি শাসন করেছেন।
সুবর্ণচরের চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নারীকে সালিসে পেটানোর ঘটনাটি তাঁর জানা নেই। কেউ এ ধরনের কোনো অভিযোগ থানায় করেননি। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন।