শেরপুর সীমান্তে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বন বিভাগের ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় মামলাটি করেন। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের ৩৬ ধারায় করা এই মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় দুজনকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। নাম উল্লেখ করা আসামি হলেন ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. নুহু মিয়া। হাতি মৃত্যুর ঘটনায় শেরপুর জেলায় এটি দ্বিতীয় হত্যা মামলা বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বন বিভাগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে একদল হাতি ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করেছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সব সময় পাহারা দেওয়া হচ্ছে, যাতে হাতি ও মানুষের কোনো ক্ষতি না হয়। কিন্তু গত শুক্রবার রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া এলাকায় একটি হাতির মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে যান। পরে গত শনিবার সকালে তাঁরা মরা হাতিটি উদ্ধার করেন। মামলার আসামি মো. নুহু মিয়ার বোরো ধানের খেতে সংযোগ দেওয়া বৈদ্যুতিক জিআই তারের সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতিটি মারা যায় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন বন কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ঝিনাইগাতী থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের ৩৬-এর (১) ধারা অনুযায়ী, বাঘ বা হাতি হত্যার অপরাধ জামিন-অযোগ্য। এতে সর্বনিম্ন ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আছে। তবে বাঘ বা হাতির আক্রমণের মুখে জীবন রক্ষার্থে এগুলোকে হত্যার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।
জেলা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা সুমন কুমার সরকার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এটি নিয়ে হাতি হত্যার ঘটনায় শেরপুর জেলায় দুটি মামলা করা হলো। এর আগে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা মালাকোচা গ্রামে হাতি হত্যার ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে চারজনের বিরুদ্ধে শেরপুরের বন আদালতে প্রথম হত্যা মামলা করা হয়েছিল।