হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ সমাবেশ

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদে খুলনার দাকোপে বিক্ষোভ সমাবেশ। শনিবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের প্রতিবাদে খুলনার দাকোপে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও মিছিল হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে উপজেলার দাকোপ ইউনিয়নের ছিটিবুনিয়া শ্মশানকালী বাজারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। দাকোপ ও কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এ কর্মসূচির আয়োজন করেন।

বিকেল চারটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত মানববন্ধন হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের প্রতিবাদে মিছিলে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা সরকার ও প্রশাসনের কাছে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা চান।

সমাবেশে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক শ মানুষ ‘তুমি কে তুমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘আমার দেশ সবার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘আমার মাটি আমার মা, বাংলাদেশ ছাড়ব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘সনাতনীর ওপর আক্রমণ, মানি না মানব না’, ‘আমার ঘরে হামলা কেন, জবাব চাই, জবাব দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। সেখানে নারীদেরও ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

সমাবেশে বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী গৌতম সরকার বলেন, ‘আজ আমরা কয়েক দিন ধরে দিন-রাত পাহারা দিয়ে যাচ্ছি। নিজেদের জানমাল আর সম্ভ্রম রক্ষায় আমরা কাজ করছি। কিন্তু এখন শুধু আত্মরক্ষা করলেই হবে না, সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ চলবে। আমরা আর পালিয়ে থাকতে চাই না। এই মাটি আমাদেরও। এটা আমাদের পিতৃপুরুষের সম্পত্তি। আমরা আর নিজ গৃহে পরবাসী থাকতে চাই না। আমরা কোথাও যেতে চাই না।’ তিনি বলেন, শুধু হাতে লাঠি নিয়ে যদি এ দেশের ছাত্রসমাজ একটা পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে তাঁরা কেন পারবেন না। তাঁরা কোথাও পালাবেন না।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, যেভাবে হিন্দুদের ওপর হামলা হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, মন্দির ভাঙচুর করা হচ্ছে, তা দেখে তাঁরা স্তম্ভিত। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁদেরও নিরাপদে বাঁচার অধিকার আছে। তাঁরা অনেক পালিয়েছেন, ১৯৭১-এ পালিয়েছেন, বিভিন্ন সময় সরকারের ক্ষমতা পরিবর্তনে পালিয়েছেন, অস্থিতিশীল যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এবার তাঁরা দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধ করবেন।

মানববন্ধনে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শেখর সরদার, সুব্রত মন্ডল, পরিতোষ মন্ডল, শিক্ষক রামপদ মন্ডল, সুকুমার বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।