ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে আপনাদের সরকারে বসিয়েছে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে: সারজিস আলম

গাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশে কথা বলছেন সারজিস আলম। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে রাজবাড়ি সড়কেছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘খুনি শেখ হাসিনা দেশে ছেড়ে পালিয়েছে। বাংলাদেশে যে দুই–তিনটি জেলায় রণক্ষেত্র হয়েছিল, যে দুই–তিনটি জেলার ছাত্র–জনতা বুক পেতে দিয়ে, রক্ত দিয়ে, সবার সামনে থেকে এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের মধ্যে একটি জেলা হলো গাজীপুর। এই অভ্যুত্থানে যারা সহযোদ্ধা, তারা তখনো জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল, এখনো জীবন দিতে প্রস্তুত আছে। কিন্তু ওই খুনি হাসিনা, খুনি জাহাঙ্গীরের দোসররা এই গাজীপুরে যদি আবার উৎপাত করতে চায়, এই ছাত্র–জনতা তাদের আর ছাড় দেবে না।’

ছাত্র–জনতার ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার গাজীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন সারজিস আলম। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে রাজবাড়ি সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওই বিক্ষোভে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

আরও পড়ুন

সারজিস আলম বলেন, ‘কালকে আমাদের অনেক সহযোদ্ধাকে তারা রক্তাক্ত করেছে। আমাদের সহযোদ্ধাদের তারা জীবননাশের হুমকি দিয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, যে ছাত্র–জনতা জীবন দিয়ে আপনাদের ওই সরকারে বসিয়েছে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে? যে পুলিশ প্রশাসন নতুন করে ওই চেয়ারগুলোতে বসিয়েছে, সেই পুলিশ প্রশাসন কেন বাংলা সিনেমার মতো ঘটনা ঘটার পর রাজপথে আসে।’

আরও পড়ুন

দুই ঘণ্টা ধরে যোগাযোগ করেও পুলিশকে মাঠে নিতে পারেননি উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ‘এখন যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিংবা পুলিশ মনে করে যে, তারা শুধু ৯টা–৫টা অফিস করবে, তাহলে তাদের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলছি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে এই ছাত্র–জনতা এই বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। আমরা দেখেছি, খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এখনো গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সন্ত্রাসীরা এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার যোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এই স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়, এই পুলিশ...যদি আজকে রাতের মধ্যে গতকালকের হামলার সঙ্গে জড়িত ওই খুনিদের গ্রেপ্তার করতে না পারে, তাহলে আমাদের তাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলি, বিগত দিন ধরে আমরা গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার খেলা দেখতে পাচ্ছি। একদল গ্রেপ্তার করে, দুই দিন পর আদালতে বিচারক নামের কিছু অকালকুষ্মাণ্ড, যারা ওই খুনি হাসিনার দোসর, তারা আবার তাদের জামিন দিয়ে দেয়।’

আরও পড়ুন

সারজিস বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি, গতকালকের হামলায় যেসব সন্ত্রাসী জড়িত ছিল, তাদের আজকের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবং তারা আজকের মধ্যে গ্রেপ্তার এবং সার্বিক ব্যবস্থাসংক্রান্ত সার্বিক বিষয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং করবে। আমরা সেটির অপেক্ষায় আছি। আমরা প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী না, আমরা কাজ দেখতে চাই। আমরা এখানে অবস্থান করব, প্রশাসনের কাজ দেখব, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমাদের এই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে, ওই সন্ত্রাসীরা কারাগারে যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান হবে রাজপথ।’

আরও পড়ুন