নেত্রকোনায় ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৬
নেত্রকোনার পূর্বধলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার পূর্বধলা থানায় এক এসআই বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। ওই মামলার ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার সকালে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের বালুচরা বাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। এই ঘটনায় শনিবার গভীর রাতে পূর্বধলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অভি আকন্দ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসাইনসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ সংগঠনটির ৩৮ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। এই মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামি হলেন সাগর খন্দকার, আশিক হাসান ওরফে আল আমিন, ইয়াহিয়া তালুকদার, আরমান চৌধুরী, মো. মোস্তাকিন ও দীপ্ত সরকার।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসাইনের নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল বের হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জেলায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে এই প্রথম নেত্রকোনায় মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার, নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়। ওই মিছিলের কিছু অংশ ভিডিও করে পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজ থেকে শেয়ার করা হয়। এ ছাড়া শাহাদত হোসাইনের ফেসবুকে আইডি থেকেও ওই ভিডিও শেয়ার করা হয়।
পূর্বধলায় ছাত্রলীগের ওই মিছিল নিয়ে গতকাল ‘নেত্রকোনায় ছাত্রলীগের আট মিনিটের ঝটিকা মিছিল’ শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই দিন রাতে মামলা করে। এ ছাড়া ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এসব নেতা-কর্মী পরস্পর যোগসাজশে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নস্যাৎ করা, সরকারকে বেকায়দায় ফেলা, নৈরাজ্য সৃষ্টিসহ আইনশৃঙ্খলা অবনতির উদ্দেশ্যে মিছিল করছিলেন। দায়ের করা মামলার ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপজেলায় গত ১৭ আগস্ট থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪১টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা পুলিশ বাদী হয়। অন্য মামলাগুলো বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাদী হয়েছেন। এসব মামলায় ১ হাজার ৮৬২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ১ হাজার ৮৯৬ জনকে। এসব মামলায় বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।