‘গায়েবি মামলা’ বলতে কোনো মামলা আছে কি না, জানা নেই: আইজিপি
বগুড়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘গায়েবি মামলা’ বলতে কোনো মামলা আছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। যদি কারও কোনো মামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে পুলিশকে জানাবেন। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি উঠে এসেছে সহিংসতা ও নাশকতার চেষ্টার অভিযোগ এনে জামালপুরে বিএনপির দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৩৬ দিনে কমপক্ষে ৩০টি মামলা হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী মতের লোকজনকে দমন করতে জেলায় জেলায় ‘গায়েবি’ মামলা করা অব্যাহত থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কথা বলেন।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে বগুড়ায় নির্মিত অত্যাধুনিক শপিং সেন্টার পুলিশ প্লাজার (কনকর্ড) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকে আমরা দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে পুলিশের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশের যথেষ্ট লজিস্টিক ও জনবল আছে। পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত আছেন। নির্বাচন সামনে রেখে জনগণের জানমাল বা সম্পত্তির যদি ক্ষয়ক্ষতি হয়, তবে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
পুলিশের জন্য ২০ লাখ রাবার বুলেট কেনা হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী শক্তিকে দমনের জন্য এই রাবার বুলেট কেনা হচ্ছে কি না, একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বিষয়টি এ রকম না। পুলিশের জন্য সরঞ্জাম প্রতিবছর কেনা হয়। এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। বিশেষ কোনো উপলক্ষে এসব কেনা হচ্ছে না।
জঙ্গিবাদ দমনে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশপ্রধান বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে দায়িত্ব পালন করছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের সক্ষমতা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। ৩০ বছর আগে সূত্রবিহীন অপরাধ সংঘটিত হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রহস্য উদ্ঘাটন দুরূহ ব্যাপার ছিল। এখন যেকোনো অপরাধ রহস্য দ্রুত উদ্ঘাটন করা যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় পুলিশ চ্যালেঞ্জ নিতে করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
বগুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশের নিজস্ব জায়গায় প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে পুলিশ প্লাজা নামের ১০ তলা এই বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। জামানত বাবদ ২৫ কোটি এবং প্রতি মাসে দোকানভাড়া বাবদ ৭ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অত্যাধুনিক এই বাণিজ্যিক ভবন উত্তরাঞ্চলে জীবনমান উন্নয়ন ছাড়াও এ অঞ্চলে উন্নতমানের পণ্য কেনার সুবিধা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরন পাল্টে দেবে, উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি চাঙা করবে। এই বাণিজ্যিক ভবন থেকে আয়ের অর্থ পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (অর্থ) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি (অর্থ) এস এম মোস্তাক আহমেদ খান, অতিরিক্ত ডিআইজি (উন্নয়ন-রাজস্ব) শোয়েব রিয়াজ আলম প্রমুখ।