দেশ-বিদেশের গবেষকদের উপস্থিতিতে মুখর পুরকৌশল বিভাগের সম্মেলন

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেওয়া গবেষক ও শিক্ষার্থীরাপ্রথম আলো

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) প্রধান সড়ক সেজেছে বাহারি রঙের পতাকা-ফেস্টুনে। চারদিকে উৎসবের আমেজ। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের সামনে মানুষের ভিড়। কেউ ব্যস্ত অনুষ্ঠান আয়োজনে, কেউ ব্যস্ত হাসি-আড্ডায়, আবার কেউ প্রবন্ধ উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পুরকৌশল বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ঘিরে এই ব্যস্ততা দেখা যায় আজ শনিবার সকালে। সন্ধ্যায় তিন দিনের এ সম্মেলন শেষ হয়।

তিন দিনের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রায় ১০টি দেশের চার শতাধিক শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী ও উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রের পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ভূতাত্ত্বিক গবেষণা, নগর সমস্যার সমাধানসহ পুরকৌশলের নানা বিষয়ের ওপর গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয় সম্মেলনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ের খুঁটিনাটি জানতে গবেষকদের উদ্দেশে ছুড়ে দেন হরেক রকমের প্রশ্ন। গবেষকদেরও সাবলীলভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায় সম্মেলনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাফকাতুল ইসলাম বলেন, ‘সম্মেলনে দেশি-বিদেশি গবেষকদের সান্নিধ্যে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমরা সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি, গবেষণার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে পেরেছি এবং নানা বিষয়ে নতুন তথ্য ও উদ্ভাবন সম্পর্কে জানতে পেরেছি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং তাঁদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতেও পুরকৌশল বিভাগ এ রকম সম্মেলন আয়োজন করবে।’

সম্মেলনে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন এক গবেষক
প্রথম আলো

গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় এ সম্মেলন। এতে ৫২টি কারিগরি সেশনে মোট ৪৪৭টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হয়। ৪টি আমন্ত্রিত আলোচনায় আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে পুরকৌশলের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন নিউজিল্যান্ডের ওপেন পলিটেকনিকের প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. গ্রেগরি ডি কস্টা, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি নিলজি কিলিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. শামস তানভির ও অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডেলেইডের অধ্যাপক ড. স্কট স্মিথ।

শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের শেষে আয়োজন করা হয় নৈশভোজ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মেতে ওঠেন বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার শেষ দিনে আমন্ত্রিত অতিথি ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় শিল্পকারখানা ও দৃষ্টিনন্দন স্থান ভ্রমণ।

সম্মেলনের সম্পাদক ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. সজীব উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য মূলত শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহী করা এবং উপস্থাপিত গবেষণা যাতে ভবিষ্যতে দেশ ও বিশ্বের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়, এমন সুযোগ করে দেওয়া। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিখ্যাত গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষক ও নীতিনির্ধারকেরা অংশ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে আমাদের শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ এবং জ্ঞান আদান-প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’