মেঘনায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে নিখোঁজ ৬ জন, ৫ জন জীবিত উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে উপজেলার চরহোগলা ইউনিয়নের চরকিশোরগঞ্জ এলাকার মেঘনা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ট্রলারে থাকা নারী, শিশুসহ ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন গজারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণকান্দি এলাকার সুমনা আক্তার (২৫), তাঁর দুই শিশুকন্যা জান্নাতুল মাওয়া (৬), সাফা আক্তার (৪), ওই দুই শিশুর চাচাতো বোন মারওয়া (৮), সুমনার ভাই সাব্বির হোসাইন (৪০) ও সাব্বিরের ছেলে রিমাদ (২)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, আজ বিকেলে সুমনাদের পরিবারের লোকজন ট্রলারে করে মেঘনা নদীতে ঘুরতে বের হন। ঘুরতে ঘুরতে চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় আসেন তাঁরা। সেখান ঘোরাঘুরি শেষে ট্রলারটি গজারিয়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে বালু নিতে মুন্সিগঞ্জের বালুমহালের দিকে আসছিল একটি খালি বাল্কহেড। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বাল্কহেডটি ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয়। তৎক্ষণাৎ ট্রলারটি ১১ যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পাঁচজন তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন ছয়জন।
ঘোরাঘুরি শেষে ট্রলারটি গজারিয়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে বালু নিতে মুন্সিগঞ্জের বালুমহালের দিকে আসছিল একটি খালি বাল্কহেড।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা আকলিমা বেগমের (৪২) সঙ্গে কথা হয়। তিনি ঘটনার আকস্মিকতায় এতটাই হতভম্ব যে স্পষ্ট করে কথা বলতে পারছিলেন না। আধো আধো স্বরে তিনি বলেন, ‘ট্রলারের সবাই আমরা আত্মীয়স্বজন। সন্ধ্যায় আমরা বাড়ির দিকে ফিরে যাচ্ছিলাম, তখন ওই বাল্কহেড আমাদের ট্রলারের দিকে আসছিল। আমাদের ট্রলার থেকে আমরা ইশারায় দিক ঘোরানোর জন্য বলতে থাকি। এরপরও তারা আমাদের ট্রলারের ওপরে এসে উঠিয়ে দিল। আমি ডুবতে ডুবতে বেঁচে গেলাম। বাকি সবাই হারিয়ে গেল।’
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত দূর শুনেছি, সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ট্রলারটি চর কিশোরগঞ্জ অংশ থেকে ১১ যাত্রী নিয়ে গজারিয়ার দিকে যাচ্ছিল। ট্রলারটি ঘাট থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনাস্থলটি সোনারগাঁ এলাকায় পড়েছে। মুন্সিগঞ্জের কাছাকাছি হওয়ায় আমাদের পুলিশ, গজারিয়া উপজেলা প্রশাসন উদ্ধারকাজ শুরু করেছে।’