উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তার

স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ

কক্সবাজারের পেকুয়ায় শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ হত্যার ঘটনায় পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাটের পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় রুবেল খান (২৭) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

নিহত ব্যক্তির পরিবার জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত নয়টার দিকে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে থেকে অপহৃত হন পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ। তাঁকে অপহরণের পর প্রথম দফায় ২৫ লাখ, দ্বিতীয় দফায় ৩৫ লাখ ও তৃতীয় দফায় ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। ১ অক্টোবর অপহৃত শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফের ছোট ভাই রিয়াদুল ইসলাম পেকুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।

এরপর পুলিশ ও র‍্যাব অপহৃতকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার কাঁচাবাজার এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত রুবেল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে নিজ বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত পুকুরে পায়ে ইট বাঁধা অবস্থায় আরিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পরপরই উত্তেজিত জনতা পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। পরে তাঁর অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও আগুন দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার রুবেল খানকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রুবেল চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডী গ্রামের হাবিবুল্লাহ খানের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানির মার্কেট ডেভেলপমেন্ট অফিসার (এমডিও) পদে পেকুয়ায় কর্মরত ছিলেন। শিক্ষক আরিফের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন রুবেল। তাঁর কাছ থেকে শিক্ষক আরিফের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। এই মুঠোফোন দিয়েই আরিফের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে চট্টগ্রামের পূর্ব মাদারবাড়ির একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়
ছবি: র‍্যাবের সৌজন্যে ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-১৫–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। রুবেলকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আরিফের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলেন রুবেল। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। হত্যাকাণ্ডে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘গ্রেপ্তার রুবেল পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছে। জাহাঙ্গীর আলমকে আটকের খবর শুনেছি। তবে এখনো থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।’