ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি, কী বলছে পুলিশ
নরসিংদীর রায়পুরায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ফলে বেওয়ারিশ হিসেবে তাঁদের দাফন করেছে রেলওয়ে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ন কবরস্থানে তাঁদের দাফন করা হয়।
এদিকে পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় এখনো কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। তদন্তে নেমে তারা অন্ধকারে রয়েছেন।
গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রায়পুরার মেথিকান্দা রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন কমলপুর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে পাঁচজন নিহত হন। তাঁদের আনুমানিক বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছর। পুলিশ ধারণা করছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা মেইল ট্রেনে কাটা পড়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশ বলছে, গতকাল দিনভর নিহতদের নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চালানো হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। তারপরও তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। বিকেলে লাশগুলো নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। রাত ১০টার মধ্যেই সব লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি ব্যাপক প্রচার পেলেও নিহতদের কোনো স্বজন লাশ শনাক্ত করতে এগিয়ে আসেননি। একদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল, অন্যদিকে লাশ শনাক্তের সম্ভাবনাও সীমিত হয়ে আসছিল। পরে তাঁদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘পাঁচজন একসঙ্গে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতের ঘটনার কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই। ঘটনাস্থল থেকে কোনো মুঠোফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসও পাওয়া যায়নি। তাঁদের কোনো স্বজনেরও সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনার তদন্তে নেমে আমরা এখনো অন্ধকারে আছি।’
রায়পুরার মেথিকান্দা রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন কমলপুর এলাকায় গতকাল সকাল ৮টায় রেললাইন ধরে হাঁটতে থাকা কয়েক ব্যক্তি পাঁচজনের লাশের টুকরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এ খবর শুনে শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হন। তবে তাঁরা নিহতদের কাউকে চিনতে পারেননি। আশপাশের এলাকারও নন তাঁরা। সকাল ৯টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. শহীদুল্লাহ ঘটনাস্থল থেকে নিহত পাঁচজনের ছড়িয়ে থাকা লাশ উদ্ধার করেন। নিহতদের মধ্যে তিনজনের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন এবং দুজনের শরীর দ্বিখণ্ডিত ছিল। এর মধ্যে চারজনের হাত-পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। লাশগুলো ১৫ গজ দূরত্বের মধ্যে ছড়িয়ে ছিল।