অনিয়মের তদন্তের দাবি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিনের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নোয়াখালী-৪ আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন। বুধবার সকালে জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাসভবনেছবি: প্রথম আলো।

ভোটের দিন কমপক্ষে ৩৫টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ড এবং নৌকার পক্ষে ব্যাপক জাল ভোট দিতে সহযোগিতা করার অভিযোগ করেছেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিন (ট্রাক)। আজ বুধবার নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের অনিয়মের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ট্রাক প্রতীকের কর্মী-সমর্থক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা, ভোটারদের ওপর হামলা, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ভোট চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে নিজেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিষয়টি দেখেছেন। এসব অনিয়মের বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। কিন্তু পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহের, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ওরফে নাছের, হামলার শিকার সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিহাব উদ্দিন বলেন, ভোটের দিন থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত সদর ও সুবর্ণচর উপজেলায় তাঁর প্রায় ১০০ নেতা-কর্মী নৌকার সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন। হামলার শিকার হয়েও অনেকে হয়রানির ভয়ে থানায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শিহাব উদ্দিন বলেন, দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে সভানেত্রী গণভবনে মতবিনিময়কালে ঘোষণা দিয়েছিলেন, যাঁরা মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের বাইরে কেউ চাইলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। তখনো তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। এরপর জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের অনুরোধে সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের আগের দিনও যদি দল থেকে তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলা হতো, তিনি নির্বাচন করতেন না। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার পর এখন দলের নেতা-কর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

নির্বাচনের আগে প্রচারণায় নৌকার সমর্থকেরা তাঁকে বাধা দিয়েছেন উল্লেখ করে শিহাব উদ্দিন বলেন, সুবর্ণচরে তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কের বাড়িতে বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক তারেক মাসুদকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাঁর অনুসারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বাড়িতে ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। কেউ গ্রেপ্তারও হননি।