ধর্ষণ মামলার দুই মাসেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিবারে হতাশা
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ঘর থেকে তুলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হওয়ার দুই মাসেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিপক্ষের হুমকিতে এলাকায় থাকা কঠিন হয়েছে উঠেছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। পুলিশ বলছে, ঘটনার পর এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আজ শনিবার বেলা ১১টায় নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগীর স্বজনেরা। তাঁদের সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীও উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগীর শ্বশুর লিখিত বক্তব্যে বলেন, তাঁর ছেলে জীবিকার প্রয়োজনে ছয় বছর ধরে সৌদি আরবে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী বসবাস করেন। তিনি গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মালেক ব্যাপারীর ছেলে মো. তুহিন (২৪) এবং তাঁর সহযোগী ওসমান আলী (৪৫) মো. জীবন (৪০) ও মো. শুভ (২১) কৌশলে ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকেন। তাঁরা ধারালো অস্ত্রের মুখে প্রবাসীর স্ত্রীকে ঘর থেকে অপহরণ করে ফসলি জমিতে নিয়ে যান। সেখানে মুখ বেঁধে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় পরদিন ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ওই চারজনকে আসামি করে নলডাঙ্গা থানায় ধর্ষণের মামলা করেন।
ভুক্তভোগী নারী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও আসামিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। আসামিরা ডিএনএ টেস্ট এড়ানোর জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় মামলাটির বিচার বিলম্ব হচ্ছে। আসামিদের স্বজনদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি নিজেও লোকলজ্জায় বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না। তিনি অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার দাবি জানান। অন্যথায় তাঁদের এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগীর চাচাশ্বশুর বলেন, আসামি তুহিনের বিরুদ্ধে এর আগেও নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে। এ ধরনের আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের গড়িমসিতে তাঁরা বিস্মিত ও হতবাক। তাঁর দাবি, আসামিরা পুলিশকে হাত করে মামলাটি দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নলডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক আলীম সরদার বলেন, ঘটনার পরপরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করিয়েছি। ধর্ষণের আলামত সংরক্ষণ করেছি, যেন আসামি গ্রেপ্তার হওয়ামাত্র ডিএনএ পরীক্ষা করানো যায়।’
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনোয়ারুজ্জামান বলেন, মামলার তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট। বাদীকে হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন তিনি।