কুমিল্লায় নির্জন বিলে দুই যুবকের মরদেহ

কুমিল্লা দেবীদ্বারে জাফরগঞ্জ এলাকার দোয়াইজলা নামের বিল থেকে আজ রোববার দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছেছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লা দেবীদ্বারে একটি বিল থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকার দোয়াইজলা নামের বিলে ফসলি জমির পাশ থেকে ওই দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ বলছে, দুই যুবকের মরদেহে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে মরদের পাশে মাদক সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এ জন্য তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হতে পারছেন না, তাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, নাকি অন্য কোনো কারণে মারা গেছেন।

নিহত দুজন হলেন দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ গ্রামের প্রয়াত দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৩০) এবং খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সুখাকেন্দ্রায় গ্রামের রহুল আমিন মিয়ার ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)। তাঁরা ইন্টারনেট ও ডিস বিল তোলা, সংযোগ ও মেরামতের কাজ করতেন।

খবর পেয়ে নিহত মনির হোসেনের স্বজনেরা আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন। মনিরের ছোট বোন জান্নাত আক্তার বলেন, ‘মনির আমার একমাত্র ভাই। তাকে কারা মারল, আমরা বলতে পারব না। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তাদের এখন কী হবে?’

স্থানীয় জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে দোয়াইজলা বিলে কৃষকেরা কাজ করতে এসে দুজনের মরদেহ দেখে আমাকে খবর দেন। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পুলিশে খবর দিই। তাঁরা দুজনই ডিস ও ইন্টারনেট বিলে উত্তোলন ও সংযোগ দেওয়ার কাজ করতেন। এটি হত্যাকাণ্ড কি না, এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’

ডিস ও ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের মালিক বদিলউল আলম বলেন, ‘মনির নিজের বাড়িতে থাকতেন। আর মোহন অফিসে থাকতেন। মোহনের বাবা আমাকে বলেছেন, রাত ১১টার দিকে শেষবার মোহনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ১১টার পর তাঁকে অফিসেও পাওয়া যায়নি।’ তাঁরা কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন কি না, তা জানতে চাইলে বদিউল বলেন, ‘দুজনের মধ্যে মনির মাদকাসক্ত ছিলেন। তবে মোহন নেশা করতেন কি না জানি না। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।’

কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (দেবীদ্বার সার্কেল) মো. শাহিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানান, প্রাথমিকভাবে ওই দুই যুবককের মৃত্যু হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, তাঁদের শরীরে আঘাতের তেমন কোনো চিহ্ন নেই। মরদেহগুলোর পাশে নেশা সেবনের কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

মো. শাহিন বলেন, ‘মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও আমরা অন্যান্য মামলার মতোই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছি। তদন্তেও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। আর এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে, নাকি হত্যা মামলা হবে, সেটি নিয়ে আমরা সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে কথা বলছি।’