সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকতে হবে নির্বাচনব্যবস্থা: জি এম কাদের
নির্বাচন পদ্ধতি এখন যেভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে তাতে আমাদের বিশ্বাস, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব হবে না। আমরা এর পরিবর্তন চাই। সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকতে হবে নির্বাচনব্যবস্থা। সরকারের নিয়ন্ত্রণের ভেতর থেকে নির্বাচনব্যবস্থা হচ্ছে, সেখানে সরকারের ইচ্ছেমতো জয়-পরাজয় নির্ধারিত হচ্ছে। এটা কোনো নির্বাচনব্যবস্থা বলা যায় না।
আজ বুধবার বিকেলে রংপুরে পাঁচ দিনের সফরে এসে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের।
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আমরা একসময় আন্দোলন করেছি। নির্বাচন বর্জন করেছি। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধেও আমরা এবং আওয়ামী লীগ একসঙ্গে আন্দোলন করেছিলাম। এই ব্যবস্থার বাইরেও একটি ব্যবস্থা দরকার। যেখানে জনগণ ভোটাধিকারের নিশ্চয়তা পাবে। সেই ধরনের একটি পদ্ধতি আমাদের বের করতে হবে। এ জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। একটা পদ্ধতি বের করতে হবে।’
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রসঙ্গে দলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। দেশের রাজনীতি কী অবস্থায় দাঁড়ায়, পরিস্থিতি কী হয়, তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের নেতা-কর্মী এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে যেটা করা দরকার, সেটিই করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব এটা স্বাভাবিক। জাতীয় পার্টি একটি রাজনৈতিক দল, যাদের দেশ শাসনের অভিজ্ঞতা আছে। এ কারণেই সব নির্বাচনী এলাকায় আমাদের সমর্থক আছে, ভোটার আছে, নেতৃত্ব আছে। আমরা দলের সব নেতা-কর্মীকে সংগঠিত করতে চাই। জাতীয় পার্টি একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে চায়।’
দেশের দুটি বড় দলের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, ‘দেশে ৯১ সালের পর থেকে দুটি বড় দল ক্ষমতায় আসছে। তাদের ওপর জনগণ সন্তুষ্ট নয়। দেশের জনগণ পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনে আমরা জাতীয় পার্টিকে গড়ে তুলতে চাই।’
নির্বাচনে জোট গঠন প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা আমাদের সাংগঠনিক অবস্থায় যদি কারও সঙ্গে জোট করতে মনে হয়, সেটি বিবেচনা করে জোট করব। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
ডলার-সংকট প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘ডলার-সংকট একটা ভয়াবহ সংকট। এটা আমি মনে করি রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। বর্তমান সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। ডলার-সংকটে সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে।
উপস্থিত ছিলেন মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।