নান্দাইলে নিখোঁজ ৩ কিশোরীর দুঃসাহসিক অভিযান, সন্ধান মিলল যেভাবে

ময়মনসিংহ জেলার ম্যাপ

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের নাম শুনলেও স্বচক্ষে দেখেনি তিন কিশোরী। তারা সলাপরামর্শ করে কক্সবাজারে গিয়ে সমুদ্রসৈকত দেখার দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গত শনিবার দুই কিশোরী মাদ্রাসা থেকে ও একজন বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে নিরুদ্দেশ হয়।

কক্সবাজারে দুই দিন ঘোরাঘুরির পর বাড়িতে ফোন করে নিজেদের অবস্থানের কথা জানায় এক কিশোরী। পরে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে তিন কিশোরীকে উদ্ধার করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। উদ্ধারের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তিন কিশোরীকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।

নিখোঁজ তিন কিশোরী ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। দুজন সেখানকার স্থানীয় এক কওমি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। আরেকজন এখন না পড়লেও আগে ওই মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।

রাজগাতী ইউনিয়নের ওই কওমি মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মাহাবুবুল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, শনিবার তাঁর মাদ্রাসার মিজান শ্রেণির (ষষ্ঠ শ্রেণি) দুই ছাত্রী নিখোঁজ হয়। দুই ছাত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশী সমবয়সী এক কিশোরীও ছিল। নিখোঁজের পর তাদের পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়স্বজনের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে তাঁরা গত রোববার রাতে নান্দাইল মডেল থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ দেশের বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠায়।

কিশোরীদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েগুলো কোনো বিপদে পড়েছে কি না, তা নিয়ে তাঁরা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। গত সোমবার সকালে এক কিশোরী বাড়িতে ফোন করে তিনজন কক্সবাজারে আছে বলে জানায়। পরে কক্সবাজারের নারকেলতলায় বসবাসকারী তাঁদের এক আত্মীয়কে ফোন করে মেয়েদের অবস্থানের বিষয়টি জানান। পরে ওই আত্মীয় তিন কিশোরীকে উদ্ধার করে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর বাড়ি থেকে লোকজন কক্সবাজারে গিয়ে কিশোরীদের নান্দাইলে নিয়ে আসেন।

আজ মঙ্গলবার ভোরে বাস থেকে নামার পর তিনজনকে প্রথমে নান্দাইল মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলের দিকে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এক কিশোরীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, মেয়েগুলো এত অল্প বয়সে যে দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এতে তারা বড় ধরনের বিপদে পড়তে পারত। তিনি তাঁর মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে বোঝাবেন। অন্য অভিভাবকদেরও মেয়েদের শাসন না করে বোঝানোর কথা বলবেন।

নান্দাইল মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল হাশেম বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তিন কিশোরীকে তাদের পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।