বিদেশিদের পদচারণে মুখর ইজতেমা মাঠ

ইজতেমা মাঠের বিদেশি কামরার সামনে বসে আছেন কয়েকজন বিদেশি মুসল্লি। শুক্রবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আবারও শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। আজ শুক্রবার সকালে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের ইজতেমা। এ উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও ইজতেমা মাঠে অংশ নিয়েছেন হাজারো বিদেশি মুসল্লি। তাঁদের পদচারণে মুখর ইজতেমা মাঠ।

তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি। আজ শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পক্ষ তথা মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের ইজতেমা। তাঁদের ইজতেমা চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত।

সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা মো. সায়েমের দেওয়া তথ্যমতে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বের ৫০টি দেশ থেকে ৭ হাজার ১৩৫ জন মুসল্লি এসেছেন। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপ, নেপাল, জিবুতিসহ নানা দেশ। মাঠের এক পাশে কামারপাড়া সেতুসংলগ্ন একটি বিশাল কামরায় রাখা হয়েছে তাঁদের। তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে ইজতেমা আয়োজকদের পক্ষ থেকে। তাঁদের সার্বক্ষণিক খেদমতে রাখা হয়েছে বাংলাদেশি মুসল্লি।

সায়েম বলেন, ‘বিদেশি মুসল্লিরা আমাদের মেহমান। আমাদের ইজতেমার সৌন্দর্য। প্রতিবছরের মতো এবারও অসংখ্য বিদেশি মেহমান আসছেন। ইতিমধ্যে আমাদের কামরা ভরে গেছে। সামনের দুই দিনে আরও অসংখ্য বিদেশি মুসল্লি আসবেন।’

কামারপাড়া-মন্নুগেট সড়কসংলগ্ন ইজতেমা মাঠের ২ নম্বর ফটক ধরে ভেতরে ঢুকতেই হাতের ডানে বিশাল জায়গা নিয়ে বিদেশি কামরা। আজ জুমার নামাজের পর বিদেশি কামরাটি ঘুরে সেখানে বিদেশি মুসল্লিদের ভিড় দেখা যায়। জুমার নামাজ পড়ে এসে সবাই দুপুরের খাবারের জন্য বসেছেন নিজ নিজ জায়গায়। এর মধ্যে বাংলাদেশি মুসল্লিরা তাঁদের সরবরাহ করছিলেন খাবার, পানিসহ আনুষঙ্গিক জিনিস।

খাবার গ্রহণ শেষে কামরার বাইরে বসে চা খাচ্ছিলেন কয়েকজন বিদেশি মুসল্লি। কথা হয় পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতি থেকে আসা সোলাইমানের সঙ্গে। কথায় কথায় জানা যায়, ১৭ বছর ধরে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যুক্ত তিনি। নিজের দেশ ছাড়াও ঘুরেছেন আশপাশের বেশ কয়েকটি দেশ। এই প্রথম এসেছেন বাংলাদেশে। তাঁর সঙ্গে এসেছে ১১ জনের একটি দল।

সোলাইমান কিছুটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলছিলেন, ‘আমি ক্লাস নাইন থেকে তাবলিগ জামাত করি। অনেক আগে ইচ্ছা ছিল ইজতেমায় অংশ নেওয়ার। কিন্তু বয়স ও তাবলিগের কিছু নিয়মের কারণে আসতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত আসতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’