বগুড়ায় জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত তামিম ও আশরাফুল

হাত নেড়ে দর্শকদের ভালোবাসা গ্রহণ করেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। রোববার সকালে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামেছবি: সোয়েল রানা

রোববার দুপুর ১২টা। বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী পর্বের মাহেন্দ্রক্ষণ। দুই পাশে জার্সি গায়ে উদ্বোধনী ম্যাচে অংশগ্রহণকারী রাজশাহী বিভাগের লাল ও সবুজ দলের খেলোয়াড়। মাঝে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক দুই অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ আশরাফুল। সঙ্গে আছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা হাতে টুর্নামেন্ট উদ্বোধনে প্রস্তুত তামিম-আশরাফুলরা।

মুহূর্তেই গ্যালারি থেকে ভেসে আসে হাজারো দর্শকের কণ্ঠধ্বনি ‘তামিম, তামিম, তামিম’। দর্শকদের ভালোবাসায় নিশ্চুপ থাকেননি তামিমও। হাত নাড়িয়ে দর্শকদের ভালোবাসা গ্রহণ করেন। জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী পর্বে এভাবেই দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হন তামিম ইকবাল খান।

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘নাইস টু বি ব্যাক। অনেক অনেক দিন পর বগুড়ায় এসেছি। বগুড়ার এই শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ঘিরে অনেক ইতিহাস, অনেক স্মৃতি। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা এই মাঠে জিতেছি। আজকের এই টুর্নামেন্টের আয়োজনে আমি খুবই খুশি। এখানে স্পোর্টস প্রমোট করা হবে। আমরা যাঁরা খেলোয়াড়, আমরা সব সময় সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করব কীভাবে স্পোর্টসকে সঠিকভাবে প্রমোট করা যায়।’

তামিম আরও বলেন, ‘আয়োজক কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁরাও খেলোয়াড়, ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ। তাঁদের উদ্দেশ্য ক্রিকেটকে সঠিকভাবে উৎসাহিত করা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের চেয়ে স্পোর্টসকে প্রমোট করা জরুরি। এই কারণে আমরা এখানে এসেছি।’ তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এই ভেন্যুতে সর্বশেষ খেলেছিল। ২০২৪ বা ২০২৫-এ আবার বাংলাদেশ এই স্টেডিয়ামে আসবে।

সতীর্থর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, শহীদ জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনন্য একটি আয়োজন। যত বেশি টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে, তত বেশি ভালো খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে। প্রতিবছর এ টুর্নামেন্টের আয়োজন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকও বক্তব্য দেন। পরে সাবেক ক্রিকেটাররা বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন। আয়োজক সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা পায় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। এরপর এই ভেন্যুতে পাঁচটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়, যার চারটিতেই বাংলাদেশ জিতে যায়। ওই বছরের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডের পর সেখানে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি।

দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর এই মাঠে আজ জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী ম্যাচে রাজশাহী সবুজ দলকে ৩৪ রানে হারিয়েছে রাজশাহী লাল দল। টসে জিতে রাজশাহী লাল দল ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান করে। জবাবে সবুজ দল ১৮ দশমিক ৪ ওভারে ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যায়।

টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী, ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ঢাকা, রংপুর ও সিলেট প্রতিটি সাংগঠনিক বিভাগেই লাল ও সবুজ নামে দুটি করে দল নিজেদের মধ্যে একটি করে ম্যাচ খেলবে। ১০ ম্যাচের ১০ জয়ী দলের সঙ্গে মূল পর্বে যোগ হবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দল। বিভাগীয় পর্যায়ের খেলাগুলো বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে হলেও ১৬ জানুয়ারি থেকে ঢাকায় মূল পর্ব শুরু হবে। ১৯ জানুয়ারি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবির সহযোগিতায় টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।