আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় নিজ দলের নেতারাও আসামি

বিএনপি

বান্দরবানে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিজ দলের লোকজনকেও আসামি করছেন। জেলা বিএনপির দ্বন্দ্বের জেরে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে চাপে ফেলতেই মামলায় জড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বান্দরবান বিএনপির দুটি পক্ষের বিরোধ বহুদিনের পুরোনো। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাম্যাচিং ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, অন্য পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জাতীয় কমিটির সদস্য সাচিং প্রু জেরী।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী মামলার আসামি হয়েছেন, তাঁদের একজন উক্যনু মারমা। তিনি বিএনপির সাচিং প্রু জেরী পক্ষের নেতা এবং বান্দরবান সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। জেলা বিএনপির মাম্যাচিং-জাবেদ পক্ষের নেতা-কর্মীরা দুটি মামলায় তাঁদের আসামি করেছেন বলে উক্যনু মারমা অভিযোগ করেছেন।

গত ২৮ আগস্ট বান্দরবান সদর থানায় আসিফ ইকবাল ও হাবিব আল মাহমুদ নামের দুজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে হামলা ও বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে পৃথক দুটি মামলা করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা, সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মীপদ দাশসহ ৪৬ আসামির মধ্যে তালিকায় বিএনপি নেতা উক্যনু মারমার নামও রয়েছে। এ ছাড়া জেরী পক্ষের বিএনপি কর্মী কামাল ওরফে সোনামিয়া মাঝি এবং বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুসের ঘনিষ্ঠ আলমগীরকে আসামি করা হয়েছে বলে উক্যনু অভিযোগ করেন।

এর আগে গত ২২ আগস্ট বিএনপির মাম্যাচিং-জাবেদ পক্ষের দুই নেতা বাদী হয়ে আরও দুটি মামলা করেছিলেন। মোট চারটি মামলার আসামি প্রায় একই। মামলাগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নাম এলেও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকেই আসামি করা হয়নি।

একটি মামলার বাদী আসিফ ইকবাল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের একই মামলায় আসামি করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, মামলা করার সময় যাচাই করার সুযোগ ছিল না। পরে তিনি জানতে পেরেছেন, আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির একটি পক্ষের নেতা-কর্মীও রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উক্যনুর সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। আইন প্রয়োগের সংশ্লিষ্টদেরও ঢালাওভাবে হয়রানি না করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে বলে আসিফ ইকবাল জানিয়েছেন।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, বিএনপি থেকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে কোনো মামলা করা হয়নি। সংক্ষুব্ধ হয়ে দলের কেউ কেউ এবং বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা মামলা করেছেন। ওই মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা জানেন না। সুয়ালক ইউপির চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়া এক নেতাকে উপজেলা নির্বাচনে সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য এলাকার লোকজন তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ। তাঁর বিরুদ্ধে মানববন্ধনও হয়েছে। এ জন্য হয়তো আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তাঁকে আসামি করা হয়ে থাকতে পারে।

বান্দরবান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জলিল জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা চারটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন।