পঞ্চগড়ে কর ফাঁকি সন্দেহে সাড়ে ১২ হাজার কেজি তৈরি চা জব্দ

পঞ্চগড়ে ১২ হাজার ৫০০ কেজি তৈরি চাসহ জব্দ করা কাভার্ড ভ্যান। সোমবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানা চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

পঞ্চগড়ে রাতের আঁধারে কর ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করা সন্দেহে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ ১২ হাজার ৫০০ কেজি তৈরি চা জব্দ করেছেন কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মুক্তাঞ্চল এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়ক থেকে গাড়িটি আটক করা হয়। আটক হওয়া হিনো ট্রেডার্স নামের কাভার্ড ভ্যানটিতে ২৫০টি বস্তায় ১২ হাজার ৫০০ কেজি তৈরি চা রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।

জব্দ করা তৈরি এসব চা তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের সুরমা অ্যান্ড পূর্ণিমা টি কোম্পানি লিমিটেডের বলে নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইবনে রাসেল। তবে সুরমা অ্যান্ড পূর্ণিমা টি কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের দাবি, নিলামে বিক্রি হওয়া এসব চা বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমেই শ্রীমঙ্গলে পাঠানো হচ্ছিল।

আরও পড়ুন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি কাভার্ড ভ্যানে নিলামবহির্ভূতভাবে কর ফাঁকি দিয়ে বিক্রির জন্য তৈরি চা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এমন সংবাদ পান পঞ্চগড় কাস্টমসের কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের মুক্তাঞ্চল এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে কাভার্ড ভ্যানটি আটক করেন। পরে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিরাপত্তার স্বার্থে চাবোঝাই কাভার্ড ভ্যানটিকে পঞ্চগড় সদর থানায় পুলিশের হেফাজতে রাখেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

আজ সোমবার বিকেলে পঞ্চগড় কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইবনে রাসেল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটক করা কাভার্ড ভ্যানটিতে ২৫০টি বস্তায় মোট ১২ হাজার ৫০০ কেজি চা আছে বলে জেনেছি, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। এসব চা সুরমা অ্যান্ড পূর্ণিমা টি কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি চা–প্রক্রিয়াকরণ কারখানার। আমরা তাদের কাগজপত্রগুলো যাচাই–বাছাই করছি। যাচাই–বাছাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব চা “অবৈধভাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে” এমনটা বলা যাবে না। যদি কর ফাঁকি দিয়ে এসব চা বিক্রি হতো, তাহলে তিন লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হতো।’

সুরমা অ্যান্ড পূর্ণিমা টি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ ফরিদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে চা আটক করা হয়েছে, তার শতভাগ সঠিক কাগজপত্র আমার কাছে আছে। গতকাল রাতে আমার দুটি গাড়ি কারখানা থেকে বের হয়েছে। এর একটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ও অপরটি শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে। এ বিষয়টি আমি আগেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তারপরও তারা শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে পাঠানো গাড়িটি আটক করেছে। আমি কাগজপত্র দিয়েছি। এখন তারা বলছে, এসব কাগজের লেখার মধ্যে নাকি কাটাকাটি আছে। আমি বলছি, আমার কাগজপত্র সঠিক।’

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) প্রবীর কুমার রায় বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চাবোঝাই কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করে তাদের রাখার জায়গা না থাকায় থানায় রেখেছে। কাগজপত্র যাচাই করে এসব চায়ের বিষয়ে তারাই ব্যবস্থা নেবে।