বিদেশ যেতে না পেরে ‘হতাশ’ যুবকের ট্রেনে কাটা লাশ উদ্ধার
বিদেশ যেতে দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করছিলেন সজল বৈদ্য (৩৫)। দালালকে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। আরেক দালাল ধরেও বিদেশ যেতে পারেননি। এসব ঘটনার পর ট্রেনে কাটা পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশন এলাকায় ঘটে।
মৃত সজল বৈদ্য সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাড়গ্রামের রবীন্দ্র বৈদ্যের ছেলে। জুড়ী উপজেলার পূর্ব আমতৈল গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। সজলের স্ত্রী সেখানে মন্দিরভিত্তিক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। এ দম্পতির সাত বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন বেলা ১টা ৪০ মিনিটে কুলাউড়া রেলস্টেশনে ঢুকছিল। এ সময় স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে রেললাইনের পাশে দাঁড়ানো এক যুবক হঠাৎ করে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রথমে ওই যুবকের পরিচয় মেলেনি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যার দিকে স্বজনেরা হাসপাতালে গিয়ে সজলের লাশ শনাক্ত করেন।
সজলের শ্বশুরবাড়ির পক্ষের আত্মীয় শ্রীদাম বৈদ্য মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সজল একসময় সৌদি আরবে থাকতেন। প্রায় তিন বছর আগে দেশে ফেরেন। কয়েক মাস আগে দালালের মাধ্যমে রুমানিয়া যেতে ছয় লাখ টাকা খোয়ান। এরপর ১৩ লাখ টাকায় ইতালি যেতে আরেক দালাল ধরেন। এ নিয়ে তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। ১০–১২ আগে সজল শ্বশুরবাড়ি আসেন। গতকাল সকালের দিকে সজল কাউকে কিছু না বলে শ্বশুরবাড়িতে মুঠোফোন রেখে বেরিয়ে পড়েন। বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে মুঠোফোন পড়ে থাকতে দেখে স্ত্রীর সন্দেহ হয়। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মিলছিল না। বিকেলে ফেসবুকে কুলাউড়ায় দুর্ঘটনার তথ্য পেয়ে আত্মীয়স্বজনেরা ছুটে যান।
শ্রীদাম বৈদ্য আরও বলেন, বার বার চেষ্টার পরও বিদেশে যেতে না পারায় সজল হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিহির রঞ্জন দেব আজ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে সজল বৈদ্য আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।