আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ৩ দিনের রিমান্ডে

শরিফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল ইসলামকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। রংপুর মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (২) বিচারক আসাদুজ্জামান আজ মঙ্গলবার এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে শরিফুল ইসলামকে রংপুরের আলমনগর থেকে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল। আজ বিকেল চারটার দিকে তাঁকে আদালতে তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পিবিআই। অপর দিকে আসামিপক্ষে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় শরিফুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত বিবৃতি আকারে আদালতকে দিয়েছেন মামলার বাদী আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। ঘটনার সঙ্গে শরিফুল ইসলামের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন স্থিরচিত্রে শরিফুলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় শরিফুল ইসলাম অন্যতম নির্দেশদাতা ছিলেন বলে তাঁরা আদালতকে বলেছেন।

বিবাদীপক্ষের আইনজীবী ইতফা আখতার বলেন, সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেলেই বোঝা যায় না, শরিফুল অপরাধী ছিলেন। এ জন্য তাঁর রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চাওয়া হয়।

এদিকে বেলা দুইটার দিকে শরিফুল ইসলামকে আটকের ঘটনায় রংপুর পিবিআই কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী। ওই সময় শিক্ষার্থী রিপন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় ধাপে সাত ব্যক্তির বিষয়ে আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু সাতজনের বিষয়ে পিবিআই কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে কি না, তা তাঁরা জানতে এসেছেন। একই সঙ্গে শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল কি না, তা জানতে এসেছেন।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে রিপন আহমেদ, সুকান্ত ইয়ামিন, গোলাম মোস্তফা, উজ্জল হোসেন, নাহিদ হাসান ও সুমন আহমেদ বেলা দুইটার দিকে পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। পরে সাংবাদিকদের রিপন আহমেদ বলেন, তাঁরা আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চান। তবে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, বিষয়টি তাঁরা পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপারকে বলেছেন।

গত ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। ১৮ আগস্ট আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।

আরও পড়ুন