গাইবান্ধায় আটক বিএনপি নেতাদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে পুলিশের কাছ থেকে আটক বিএনপির নেতাদের ছিনিয়ে নেন তাঁদের স্বজন ও কর্মীরা। গতকাল রোববার দুপুরে মহিমাগঞ্জ চিনিকলের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে হরতাল চলাকালে পুলিশকে মারধর করে বিএনপির আটক তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হানুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে করা মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল আহম্মেদ আজ সোমবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ পরিদর্শক বুলবুল আহম্মেদ বলেন, বিএনপির যে তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাঁরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে মামলার পর ওই দিন রাতেই নিজ এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিএনপির চার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। তাঁরা থানা হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ বাজারে দুপুর ১২টা থেকে বিএনপির কর্মীরা পিকেটিং শুরু করেন। তাঁরা মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলের সামনে পিকেটিং করছিলেন। খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে পিকেটিংয়ে বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিনজনকে আটক করে তাদের ভ্যানে তোলেন।

পুলিশ আটক ব্যক্তিদের নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার উদ্দেশে রওনা দিলে বিএনপির কর্মী ও আটক নেতাদের আত্মীয়স্বজন রাস্তায় বসে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। তাঁরা সুফিয়ানের মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দেন। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশকে মারধর শুরু করেন। এ সময় গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ মারধরের শিকার হন। পরে পুলিশের ভ্যান থেকে তিনজনকে ছিনিয়ে নেন তাঁরা। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে কয়েকটি রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে মহিমাগঞ্জ এলাকায় থমথমে অবস্থা চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।