সেলফির বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁরা মানুষের কাছে ভোট চাচ্ছেন: গয়েশ্বর
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেলফির বিজ্ঞাপন দিয়ে এখন মানুষের কাছে ভোট চাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন সেলফিনির্ভর প্রধানমন্ত্রী। সেলফির বিজ্ঞাপন দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। একটা রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে একটা সরকারপ্রধান একসঙ্গে দাঁড়াবেন, বসবেন, ছবি ওঠাবেন—এটাই তো স্বাভাবিক। মানে কতটা নিঃস্ব হলে, কতটা দেউলিয়া হলে এমন কাজ করতে পারে। আর তাদের (আওয়ামী লীগ) সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সেই সেলফির মালা গলায় ঝুলিয়ে ভোট চাচ্ছেন। সেলফির বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁরা মানুষের কাছে ভোট চাচ্ছেন।’
গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, ‘কিছু ফেরিওয়ালা আছে। বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। তারা ফেরি করে লোকজন জড়ো করছে। আগামীতে তারা আরেকটা নাটক করবে। আরেকটা নাটকের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করবে। তার লক্ষণ, আজ একটা পার্টি হয়েছে, সেই পার্টির নাম বলব না। সেই পার্টিতে কিছু শকুন ঢুকেছে। ইতিমধ্যে রাজনীতিবিদ কেনাবেচার হাট শুরু হয়ে গেছে। তাই আপনার আশপাশে জাতীয়তাবাদী দলের কোনো নেতা যেন বিপথগামী না হয়, সেটা খেয়াল রাখবেন। স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে যারাই পা দেবে, তাদের পা আস্ত থাকবে না। জনগণ তাদের পা ভেঙে দেবে।’
বেলা তিনটায় টঙ্গীর কলেজগেট-সংলগ্ন বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ির সামনে সমাবেশের আয়োজন করে গাজীপুর মহানগর বিএনপি। বেলা দুইটা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা। নেতা-কর্মীদের কারও হাতে ছিল ব্যানার, কারও হাতে ফেস্টুন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই সরকার এমনিতেই পড়ে যাবে। কিন্তু এমনিতেই পড়ে গেলে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে না। সরকারকে আপনাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলতে হবে। আপনাদের ধাক্কায় সরকারের পতন হলে জনগণ আপনার ওপর ভরসা করবে। আমাদের দাবি একটাই, সরকার পতন। তাই সবাইকে রাজপথে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ভোটচোরের দিন শেষ, খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মালিক জনগণ। জনগণ এখন আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা বগুড়া থেকে রাজশাহীতে রোডমার্চ করেছিলাম। দুই ঘণ্টার রাস্তা যেতে আমাদের ১০ ঘণ্টা লেগেছিল। কারণ, পুরো রাস্তায় তপ্ত রোদে পুড়ে জনগণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে। জনগণ সরকারের ওপর আস্থা হারিয়েছে। আমাদের আন্দোলন জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার। বাক্স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবেশ নিশ্চিত করার। রাজপথে থেকে আমাদের এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিমের সঞ্চালনায় এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে দলটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।