‘প্রথম আলো পাঠকের আস্থার জায়গাটা ধরে রেখেছে’

প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেক কাটেন অতিথিরাছবি: প্রথম আলো

‘যখন কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো ঘটনার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে দেখতে পাই, তখন সঠিক তথ্যটা জানার জন্য আমি প্রথম আলোকে খুঁজি। প্রথম আলো পাঠকের মনে আস্থার জায়গা করে নিয়েছে। ২৬ বছর ধরে প্রথম আলো সেই আস্থার জায়গা ধরে রেখেছে।’

প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বরগুনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খালেদা জান্নাতি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বরগুনা বন্ধুসভা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বন্ধুসভার সহযোগিতায় একইভাবে বরিশাল, ফরিদপুর, নীলফামারী, সৈয়দপুর, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মাদারীপুর, বান্দরবান ও পিরোজপুরে আজ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয়েছে গতকাল বুধবার বিকেলে। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এসব অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বরগুনা

বরগুনায় প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা। আজ জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

বরগুনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, প্রথম আলো সমাজ পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃর্তী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিচ্ছে প্রথম আলো। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। প্রথম আলো দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে থাকে। নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের দুর্দশার কথা তারা লেখনির মাধ্যমের ফুটিয়ে তোলে। প্রথম আলো রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশ করে।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক প্রতাপচন্দ্র বিশ্বাস, বরগুনা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খালেদা জান্নাতি, বরগুনা কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান, বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি তাপস মাহমুদ, বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সালেহ, বরগুনা বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নাঈম। বরগুনা বন্ধুসভার জিয়াদ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিন (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক লিংকন বাইয়ান, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সুমন সিকদার, আবদুল আলিম প্রমুখ।

আরও পড়ুন

প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘প্রথম আলো সমাজ পরিবর্তনে কাজ করে। আমি যখন কোথাও যাই, প্রথম আলো পত্রিকাটি সঙ্গে রাখি। প্রথম আলো হাতে পেলে মনে হয়, একঝলক আলো পেয়েছি হাতে। প্রথম আলোর সম্পাদকীয় ও সাহিত্য কলাম পড়ে যেকোনো পরীক্ষা দেওয়া যায়। আমি প্রথম আলোর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’

বরিশাল

প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেক কাটেন অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

চাপ, ভয়, প্রলোভনেও প্রথম আলো সব সময় সত্য প্রকাশে অবিচল ছিল। ঝুঁকি নিয়ে সত্য প্রকাশ করে দেশের মানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সত্য তুলে ধরেছে। ক্ষমতাবানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পেশাদারত্ব, সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে প্রাধান্য দিয়েছে। এ জন্য প্রথম আলো হয়ে উঠেছে মানুষের অব্যক্ত ভাষার অনন্য এক মাধ্যম।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশালে আয়োজিত সভায় বক্তারা কথাগুলো বলেন। প্রথম আলোর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তি, শিক্ষক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক ও পত্রিকার এজেন্টরা।

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিএম কলেজের সমন্বয়ক আকবার মুবিন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের উত্তাল দিনগুলোয় আমরা যখন রাজপথে কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, তখন আমাদের অনুপ্রেরণা ছিল প্রথম আলো। আমাদের পাশে থেকে প্রথম আলো সাহস জুগিয়েছে, অনুপ্রেরণা দিয়েছে সাহসিকতার সঙ্গে। প্রথম আলো এভাবেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগরুক থাকুক, জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাতির জন্য কাজ করুক, আমরা সেটাই চাই।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার, মানিক মিয়া মহিলা কলেজের প্রভাষক ওমেনা এনজিলিন শর্মি, কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মনির হোসেন, পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠান টপ টেন বরিশালের ব্যবস্থাপক ইমরান শেখ, প্রথম আলোর বিপণন বিভাগের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান, বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবণ্য রহমান, সাব্বির হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বরিশাল বন্ধুসভার সভাপতি নাঈম ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রথম আলোকে শুভেচ্ছা জানান সমাজসেবা বিভাগের বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ।

ফরিদপুর

ফরিদপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দীন আহমেদ, প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও ফরিদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি শিপ্রা রায়, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আবদুর হালিম, উপাধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান, সিপিবির কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রফিকুজ্জামান, জেলা খেলাঘরের সভাপতি আতাফ মাহমুদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ‘আলোকের এই ঝরনাধারায়...’ গানটি পরিবেশন করে প্রথম আলো ফরিদপুর বন্ধুসভার সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মিঠুন দাস, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ গান পরিবেশন করেন প্রথম আলো ফরিদপুর বন্ধুসভার দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর।

অধ্যাপক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘প্রথম আলো অন্ধকারে আলো ফেলে সত্য তুলে আনে। প্রথম আলো গণমানুষের কথা বলে। সমাজের সঠিক চিত্র তুলে নিয়ে আসে। আমরা যখন ভুলপথে চলতে শুরু করি, তখন প্রথম আলো আমাদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেয়।’ শিপ্রা রায় বলেন, ‘প্রথম আলো আমাদের কাছে দেশের সঠিক চিত্র জানার আসল মাধ্যম। সমস্ত ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নির্ভিক চিত্তে প্রথম আলো তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশ চলবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি বলে আমাদের প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে।’

নীলফামারী

নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটছেন অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সুধী সমাবেশ, কেক কাটা, মিষ্টিমুখ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সুধী সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রথম আলো যে নীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে, ২৬ বছরেও সেই নীতিতে অটুট আছে। এত বাধা–বিপত্তিতেও প্রথম আলো তার নীতি থেকে একটুও সরে দাঁড়ায়নি। চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, শ্রমিক সবার কাছে প্রথম আলো পছন্দনীয় হয়ে উঠেছে শুধু তার নীতির কারণে। শুধু বস্তুনিষ্ঠতাই নয়, সমাজ পরিবর্তনের জন্যও কাজ করে প্রথম আলো।

সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। প্রথম আলো নীলফামারী বন্ধুসভার সহসভাপতি নিপুন রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নীলফামারী ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মেজবাহুল হক, নীলফামারী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক নূর আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ভুবন রায় প্রমুখ। নীলফামারী বন্ধুসভার সভাপতি রুবি আক্তারের সঞ্চালনায় সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান।
অধ্যক্ষ মো. মেজবাহুল হক বলেন, ‘যে পত্রিকা সত্যে তথ্যে লেখা প্রকাশ করবে, সে পত্রিকার অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমি মনে করি, প্রথম আলো সে ধরনের একটি পত্রিকা। এ কারণে প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে কোনো খবর আমরা জনগণ গ্রহণ করি না। সে ক্ষেত্রে প্রথম আলো তার নীতি বজায় রেখেছে।’

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন প্রথম আলো নীলফামারী বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি সুধির রায়, সদস্য সূভাষ ঋষি, সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার কার্যনির্বাহী সদস্য তপন রায়।

সৈয়দপুর

সৈয়দপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কুইজ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

নীলফামারীর সৈয়দপুরেও প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্ধুসভা। সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, কামারপুকুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষক হাফিজুর রহমান প্রমুখ। সৈয়দপুর বন্ধুসভার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সৈয়দপুর প্রতিনিধি এম আর আলম, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক শামীম আল সাজিদ।

আরও পড়ুন

অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রথম আলো জাতিকে সঠিক জায়গায় রাখতে গিয়ে অনেক ঝুঁকিতে পড়েছে। কিন্তু সাহস হারায়নি। প্রতিনিয়ত প্রথম আলোর নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখেছি।’

আলোচনা সভা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছয়জন শিক্ষার্থী কুইজ জিতে বই উপহার পান। অনুষ্ঠানে নৃত্য ও দেশাত্মবোধক গানে অংশ নেন সৈয়দপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

পিরোজপুর

পিরোজপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রথম আলো তার বস্তুনিষ্ঠতা দিয়ে মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রথম আলো শুধু পত্রিকা নয়; প্রথম আলো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়, অ্যাসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করে, অদম্য মেধাবীদের শিক্ষায় সহায়তা দিয়ে আসছে।

পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল ইসলাম, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি খালিদ আবু, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক মৌমিতা সরকার, প্রথম আলোর পিরোজপুর প্রতিনিধি এ কে এম ফয়সাল।

অনুষ্ঠানে মৌমিতা সরকার বলেন, ১৯৯৮ সালে যখন প্রথম আলো এল, বাসার পত্রিকাটি বদলে গিয়ে চলে এল প্রথম আলো। এরপর আর প্রথম আলোর পরিবর্তন হয়নি। সমাজের অসঙ্গতি প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকের হৃদয় জয় করেছে তারা।’

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অতিথিরা। আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

‘দিনের যেকোনো সময়ের যেকোনো ঘটনা জানতে মুঠোফোনে অনলাইন ওয়েব পোর্টাল ব্রাউজ করি। কিন্তু সত্য তথ্য জানতে প্রতিদিন অসংখ্যবার প্রথম আলোর অনলাইন চেক করি।’

কুষ্টিয়ায় প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কুষ্টিয়া সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওবাইদুর রহমান। আজ বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করে প্রথম আলো কুষ্টিয়া বন্ধুসভা। বন্ধুসভার সদস্য ইমাম মেহেদীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর কুষ্টিয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদী হাসান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরওয়ার মুর্শেদ, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম মুসা কবির, কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক অজয় কুমার মৈত্র, অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, আইনজীবী আবদুর রউফ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক এম জুবায়েদ রিপন, কুষ্টিয়া টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান প্রমুখ।

অধ্যাপক সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স ২৫ বছর আর প্রথম আলোর বয়স ২৬ বছর। প্রথম আলোর প্রথম দিনের সংখ্যা আজও যত্নে রেখেছি। প্রথম আলো সত্য তথ্য দেয় আর সত্য তথ্য ভয় পায় শাসকেরা।’

কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর বলেন, জুলাই–আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রথম আলো প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যে সত্য তথ্য তুলে ধরেছে, তা প্রশসংনীয়। এ জন্যই প্রথম আলো সবার পত্রিকা। সবার থেকে একটু হলেও আলাদা।

কুমিল্লা

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের মুক্তমঞ্চে
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লায় প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় নগরের ধর্মসাগর পাড়ে কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের মুক্তমঞ্চে। বন্ধুসভার সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘পথচলার শুরু থেকেই প্রতিটি সরকারের সময়ই প্রথম আলো সরকারের বিরাগভাজন ছিল। আমরা চাই, ভবিষ্যতেও এমনই থাকুক প্রথম আলো। শুরু থেকেই প্রথম আলো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে কখনো আপস করেনি। এ জন্য প্রথম আলোর প্রতি পাঠকদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কুমিল্লা বন্ধুসভার উপদেষ্টা ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী, বন্ধুসভার উপদেষ্টা দিলনাশি মোহসেন, ব্রাহ্মণপাড়ার মাধবপুর আলহাজ মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম, কুমিল্লা নগরের এথনিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাকছুদুল আলম, কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাফিজ, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক ও লেখক আহসানুল কবীর, কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন লিটন, বন্ধুসভার উপদেষ্টা রোকেয়া বেগম, মাহমুদা আক্তার ও আইরিন মুক্তা অধিকারী, কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক আল আমিন, কুমিল্লা বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি চন্দন দাস প্রমুখ।

আরও পড়ুন

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে প্রথম আলো সম্পাদকের বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা বাণী পাঠ করে শোনান প্রথম আলোর কুমিল্লার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কুমিল্লা বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কর্মকার। অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার বন্ধুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার পরিবেশনা
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মানুষের আস্থায় পরিণত হয়েছে প্রথম আলো। প্রথম আলো শুধু একটি পত্রিকা নয়, একটি প্রতিষ্ঠান। এটি সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে। আর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে বলে সব সময় শাসকগোষ্ঠী এটিকে প্রতিপক্ষ মনে করে। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়লেও সত্যকে প্রকাশ করে যাচ্ছে প্রথম আলো। এই পত্রিকার কাছে পাঠকদের চাহিদাও অনেক বেশি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মো. নাসির মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক প্রশাসন হারুন অর রশিদ, শুদ্ধ উচ্চারণ নিয়ে কাজ করার সামাজিক ব্যক্তিত্ব শামীমা সুলতানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শারমিনুল ইসলাম, বন্ধুসভার শাজাহান মিয়া ও মাইনুদ্দিন রুবেল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার অর্থবিষয়ক সম্পাদক ফাহিমদা আক্তার ও সদস্য হাফসা আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেন।

অনুষ্ঠানে আইনজীবী নাসির মিয়া বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে বলে সব শাসকগোষ্ঠী এই পত্রিকাকে প্রতিপক্ষ মনে করে। এ জন্য প্রথম আলো সব সময় শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়লেও সত্যকে প্রকাশ করে গেছে। স্বচ্ছতাসহ সবাইকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করাসহ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে ২৬ বছর পূর্ণ করেছে এই পত্রিকা। প্রথম আলো আগামী দিনেও তার অভিষ্ট লক্ষ্যে একইভাবে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার পাঠাগার সম্পাদক ফৌজিয়া হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ মোল্লা, সদস্য নাজনীন আক্তার ও আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতিন হাসনাত। সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্য আলিয়া মাহবুব। একক ও দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্য হুসাইন ইসলাম ও তাশদিয়া আক্তার।

বগুড়া

বগুড়ায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়কের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রীতি সম্মিলনীর আয়োজন করেন বগুড়া বন্ধুসভার সসদস্যরা। এতে বক্তব্য দেন পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র, সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শওকত আলম মীর, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বগুড়ার সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদার রহমান, চিকিৎসক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশাদ সায়ীদ, বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সমিতির বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ, সরকারি আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান গাজী তৌহিদুল আলম চৌধুরী, সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক গোলজার হোসেন, বগুড়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আমিনুল ফরিদ, প্রথম আলো বগুড়ার নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার পারভেজ, ব্যবস্থাপক (সাপ্লাই চেইন) ফেরদৌস আহম্মেদ, বগুড়া বন্ধুসভার সভাপতি চন্দন কুমার রায় প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র বলেন, ২৬ বছর আগে প্রথম আলো যাত্রা শুরু করেছিল। তারপর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, অনেক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে, অনেক কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে পাঠকের আস্থা অর্জন করেছে। গোটা বিশ্বে বাংলা পত্রিকার মধ্যে পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান এখন প্রথম আলোর। ২৬ বছরে সাফল্যের চূড়ায় দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোকে এখনো নানা সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পাঠকের এই আস্থা প্রথম আলোকে ধরে রাখতে হবে।

অধ্যক্ষ শওকত আলম মীর বলেন, যাত্রা শুরুর পর থেকেই প্রথম আলো মানুষের কথা বলে, মানবিকতার কথা বলে। শিক্ষার কথা বলে, সুসাংবাদিকতা করে। ভবিষ্যতে শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাঙ্গন নিয়ে প্রথম আলো আরও বেশি বেশি লিখবে, আরও বেশি বলবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের মার্কেটিং বিভাগের প্রধান ইব্রাহীম হোসেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সনাক) বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন ইসলাম, সাংস্কৃতিক সংগঠক জি এম সাকলাইন, ব্যবসায়ী আলী এখতিয়ার, বগুড়া লেখক চক্রের সভাপতি ইসলাম রফিক, লেখক ও কবি ড্যারিন পারভেজ, অনন্য রফিক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, বগুড়া বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম, আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি আবদুল মোবিন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাসান, মাহমুদুন নবী প্রমুখ।

আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যান্ড দল ‘বি বয়েজ’–এর শিল্পী তানভীর তন্ময় আলম ও বন্ধুসভার আল গালিব খান গান গেয়ে শোনান।

বান্দরবান

বান্দরবানে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কেক কাটেন অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলো সঠিক পথে থাকলে বাংলাদেশ পথ হারাবে না। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে এগিয়ে চলার ২৬ বছরে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। কাউকে বাদ না রেখে সবার সঙ্গে ও সবাই মিলেই কেবল দেশের সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। প্রথম আলো সব সময় সেই পথই দেখায়।

বান্দরবানে প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সুধীজনেরা এ কথা বলেন। বেলা সাড়ে চারটায় বান্দরবান প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়নকর্মী, ব্যবসায়ী, পত্রিকার এজেন্ট, হকারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানিয়ে কথা বলেন প্রবীণ শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াকুব, বান্দরবান সরকার কলেজের শিক্ষক মেহেদি হাসান, বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা, উন্নয়নকর্মী লেলুং খুমি, সমাজকর্মী জর্জ ত্রিপুরা, লেখক ও গবেষক ইয়াংঙান ম্রো, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থোয়াইচিংপ্রু মারমা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা চথুইপ্রু, বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দীলিপ কুমার নাথ, আইনজীবী মাধবী মারমা প্রমুখ।

প্রবীণ শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর প্রথম সংখ্যা থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রথম আলো পড়েন। ২৬ বছরে প্রথম আলোর ওপর প্রতিটি সরকারের সময়ে প্রতিবন্ধকতা এসেছে। কিন্তু প্রথম আলো সত্যের পথে অবিচল থেকেছে বলে সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে পেরেছে। শুধু তা–ই নয়, বাংলাদেশকে পথও দেখিয়েছে।

অনুষ্ঠানে মারমা, বম, ত্রিপুরা, ম্রো, খুমি, বাঙালিসহ প্রায় ১২টি জাতিগোষ্ঠীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন বলেন, আজকের অনুষ্ঠানই প্রকৃত বাংলাদেশ, যেখানে সবাই আছে, থাকবে।

মাদারীপুর

মাদারীপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অতিথিরা
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় মাদারীপুর পৌরসভার সম্মেলনকক্ষে। সেখানে বক্তারা বলেন, প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদ ও তথ্যগুলো মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। পত্রিকাটি থেকে দৈনন্দিন অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে পারা যায়, যা মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। ব্যক্তিজীবনে উন্নতি ঘটানোর ক্ষেত্রেও পত্রিকাটা ভূমিকা রাখে।

মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি সোহেল রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মহাদেব বর্মন, মাদারীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হিতেন চন্দ্র মন্ডল, রবীন্দ্র সম্মেলন পরিষদের সহসভাপতি মো. মহিউদ্দিন ফারুকী, সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য এনায়েত হোসেন, মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ভাস্কর সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কানাই লাল দাশ, প্রথম আলোর এজেন্ট ওমর আলী শিকদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কে এম হাবিবুর রহমান, মৈত্রী মিডিয়া সেন্টারের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, বন্ধুসভার উপদেষ্টা অখিল সরকার, তারুণ্য পরিবার মাদারীপুরের উপদেষ্টা মেহেদী হাসান প্রমুখ।

মাদারীপুর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমান জুলিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর মাদারীপুর প্রতিনিধি অজয় কুন্ডু। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন উদ্ভাস আবৃত্তি সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রাবন্তী মজুমদার ও গান পরিবেশন করেন বন্ধুসভার বন্ধু বাঁধন খান।

ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁওয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রথম আলো শুধু একটি পত্রিকার নাম নয়, এখন এটি একটি আন্দোলনের নাম। সমাজে ভালো কিছু সৃষ্টির জন্য পত্রিকাটি সব সময় অন্যদের তুলনায় এগিয়ে ছিল। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি সৃজনশীল ভাবনার কারণেও প্রথম আলো দেশসেরা পত্রিকা। সমালোচকেরা দিন শেষে আস্থার জায়গা হিসেবে বেছে নেন প্রথম আলোকে।

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের বড়মাঠের শহীদ মিনারে গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভা। জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেনের সঞ্চালনায় ‘জেগেছে বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, উদীচী ঠাকুরগাঁও সংসদের সভাপতি সেতেরা বেগম, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক নাসরিন জাহান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঠাকুরগাঁওয়ের সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ সোহান। ফাঁকে ফাঁকে চলে বন্ধুসভার সদস্য ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্যদের নাচ ও গান।


[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর, বরিশাল, বগুড়া, কুষ্টিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া; প্রতিনিধি, বরগুনা, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পিরোজপুর, ঠাকুরগাঁও, মাদারীপুর, বান্দরবান এবং সংবাদদাতা, কুমিল্লা]