যশোরে পুকুর দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, তিনজন গ্রেপ্তার

হাতকড়াপ্রতীকী ছবি

যশোরের চৌগাছা উপজেলার কাদবিলা গ্রামের হিন্দু পরিবারের বিরোধপূর্ণ পুকুরের দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবারের ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের পাঁচ নেতা–কর্মী আহত হন।

এ ঘটনায় আজ বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ১৩ কর্মী–সমর্থককে আসামি করে চৌগাছা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চৌগাছা উপজেলার কাদবিলা গ্রামের সুশান্ত রায় মৈত্রর ছেলে অপূর্ব রায় মৈত্র, নাজিম উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা ও আবদুল আজিজের ছেলে মকবুল হোসেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোরের চৌগাছা উপজেলার কাদবিলা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক পরিবারের চারজনের মালিকানাধীন ৮৫ বিঘার ছয়টি পুকুর আছে। দীর্ঘদিন ধরে পুকুরগুলো নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। দ্বন্দ্বের জেরে ২০১২ সালে একজন খুনও হয়েছে। ওই চারজনের মধ্যে তিনজনের পুকুর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইজারা নেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র এবং অন্যজনের অংশ নেন ইজারা নেন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি নেতা আবুল কাশেম ও তাঁর অনুসারীরা সবগুলো পুকুর দখলে নেন। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় দেবাশীষ চারটি ও কাশেম দুটি পুকুরের মাছ ধরবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সেই হিসেবে দেবাশীষ চারটি পুবুরের মাছ ধরেছেন। কাশেম গতকাল সকালে তাঁর অংশের দুটি পুকুরের মাছ ধরতে গেলে পুকুরের অংশীজন অপূর্ব মৈত্ররা বাধা দেন। এ সময় অপূর্ব মৈত্রের পক্ষে ওয়ার্ড বিএনপির বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম অবস্থান নিলে তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে কাশেমের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকি একজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় কাশেম পক্ষের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পায়েল হোসেন বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের পুকুরের ইজারা নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপির আবুল কাশেম ও সালামের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। সালাম আওয়ামী লীগের সমর্থক অপূর্ব মৈত্রের পক্ষে অবস্থান নেন। হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। এ ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।