লালমোহনে বাজার ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৩
ভোলার লালমোহন উপজেলায় একটি বাজারের ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের দেবীরচর বাজারে কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ন (উত্তর) বিএনপির সভাপতি শহিদুল্যাহ মেলকার ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামালের লোকজনের মধ্যে দেবীরচর বাজার ইজারা নিয়ে সোমবার সকালে কথা–কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার একপর্যায়ে শহিদুল্যাহর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কামালের লোকজনদের ওপর হামলা চালাতে আসেন। পরে তাঁদের প্রতিহত করতে গিয়ে দুই পক্ষ কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়ায়। এ সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বদরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল বলেন, গত ৫ আগস্টের পর শহিদুল্যাহ মেলকার ও তাঁর লোকজন দেবীরচর বাজার এলাকায় বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মী ও ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদাবাজি শুরু করেন। তাঁরা স্থানীয় নূর ইসলামের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে শহিদুল্যাহ মেলকার ও তাঁর লোকজন কামালের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তিনি উপজেলা বিএনপির নেতাদের জানালে তাঁরা দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেন এবং চাঁদার টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন শহিদুল্যাহ মেলকার। মূলত এ নিয়েই তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
কামাল আরও বলেন, ‘আমি দেবীরচর বাজারের ইজারাদার আসাদ মেলকারের কাছ থেকে বাজারের খাজনা ওঠানোর জন্য কিনে নিই। তবে শহিদুল্যাহ মেলকার আমাকে বাজার থেকে খাজনা তুলতে দিচ্ছিল না। এমনকি আমাদের মারধর করার জন্য রোববার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এলাকায় আনেন। বিষয়টি আমি জানার পর রোববার রাতেই থানায় অবহিত করেছি। তখন থানা থেকে আমাকে বলা হয়েছে সমস্যা হলে তাদের জানাতে। তবে সোমবার সকালে শহিদুল্যাহ মেলকার ও তাঁর লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান।’ এ ঘটনায় তাঁর পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বদরপুর ইউনিয়ন (উত্তর) বিএনপির সভাপতি শহিদুল্যাহ মেলকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি আর ফোন ধরেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁর পক্ষের বদরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো নেছারুল্লাহ বলেন, কামাল পক্ষের হামলায় শহিদুল্যার ৪-৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেবীরচর বাজারের ইজারাকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরে ঝামেলা চলছিল। বিএনপির নেতারা বিষয়টি মীমাংসা করার একাধিকবার চেষ্টাও করেছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।