সিলেট শহরের একমাত্র হাওরে অতিথি পাখির কিচিরমিচির
কচুরিপানা ঠাসা একটি হাওর। মাঝখানে স্বচ্ছ পানি। কচুরিপানার মধ্যে ও পানিতে চড়ে কিচিরমিচির শব্দে খেলা করছে হাজারো অতিথি পাখি। জায়গাটি সিলেট শহরের মধ্যেই। নগরের দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকার বগলাজান হাওরে শীতের শুরুতেই হাজির হয়েছে অতিথি পাখিরা। এটি সিলেট সিটি করপোরেশনের একমাত্র হাওর।
নগরের দক্ষিণ সুরমা হয়ে শহর থেকে বের হওয়ার পথে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষেই বগলাজান হাওরের অবস্থান। এর পাশ দিয়ে রেললাইন চলে গেছে। সিলেট নগর থেকে বের হতে কিংবা ঢুকতে অতিথি পাখিগুলো কিচিরমিচির শব্দে স্বাগত ও বিদায় জানায় পথচারীদের।
হুমায়ূন রশীদ চত্বর হয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে এগিয়ে গেলেই মোমিনখলা এলাকা। মহাসড়কের ডান পাশেই বগলাজান হাওর। আজ মঙ্গলবার সকালে হাওরের পাশে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত পাতি সরালি কিচিরমিচির করছে, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াচ্ছে। খাবারের খোঁজ কিংবা নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করে সময় কাটাচ্ছে পাখিগুলো।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে বগলাজান হাওর। হাওরটির আয়তন প্রায় ৯০০ একর। এর মধ্যে রেলওয়ের ও সরকারি খাস জায়গাও আছে। হাওরটিতে এবারই এত পাখি এসেছে। এর আগে এখানে এত পাখি দেখেননি আশপাশের লোকজন। সপ্তাহখানেক আগে থেকে পাখিগুলো হাওরটিতে আসতে শুরু করে।
হাওরের পশ্চিমে আছে আবাসিক এলাকা চান্দাই, কায়স্থরাইল, মোমিনখলা ও বারখলা। মোমিনখলা এলাকার বাসিন্দা মো. আল মামুন বলেন, পাখিগুলো নতুন দেখেছেন তিনি। এর আগে হাওরে পাখিগুলো তিনি দেখেননি। এখন পর্যন্ত কেউ পাখিগুলোকে বিরক্ত করছে, এমনটা দেখেননি তিনি।
বারখলা এলাকার বাসিন্দা হুমায়ন কবীর বলেন, আগে অল্প কিছু অতিথি পাখি এলেও এবার বেশিসংখ্যক পাখি আসায় সবার নজরে পড়ছে। তবে পাখিগুলোকে বিরক্ত করলে সেগুলো আর আসবে না।
বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী, পরিযায়ী পাখি হত্যার দায়ে একজন দোষীকে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে। একইভাবে কোনো ব্যক্তি যদি পরিযায়ী পাখির মাংস, দেহের অংশ সংগ্রহ করেন, দখলে রাখেন কিংবা ক্রয়-বিক্রয় করেন বা পরিবহন করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা প্রথম আলোকে বলেন, অতিথি পাখিগুলোকে যাতে কেউ বিরক্ত ও শিকার না করে এ ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক আছে।