চেক দিচ্ছেন আর টাকা নিচ্ছেন হিসাবরক্ষক

চেক বুঝিয়ে দিয়ে টাকা নিচ্ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলাম। ভিডিও থেকে নেওয়াছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

টেবিলের ওপর ফাইলপত্র। রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নকাজের বিলের নথি। চেয়ারে বসে আছেন হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলাম। চেক বুঝিয়ে দিলেন একজনকে। নিলেন নগদ অর্থ। এক শ টাকার কয়েকটি নোট। তা নিয়ে নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নেন। এরপর আরেকজনের কাছ থেকেও নেন টাকা।

উন্নয়নকাজের বিলের চেকের জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলাম। ‘ঘুষ’ নেওয়ার এ রকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ভিডিও প্রায় দুই থেকে তিন বছর আগের। তবে তা তাঁদের কাছে এসেছে গত রোববার। এখন এই ভিডিওর ভিত্তিতে হিসাবরক্ষক মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশনের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ওই ভিডিওতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে উত্তম নামের একজন অফিস সহায়ককে দুই বছর আগে বদলি করা হয়েছে। তাই ধারণা করছেন, এটি অন্তত দুই থেকে তিন বছর আগের। এখন এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ঠিকাদারকে বিলের চেক দেন মাসুদ। তখন ওই ঠিকাদার তাঁর হাতে টাকা দেন। টাকা নিয়ে তা নিজের প্যান্টের পকেটে রেখে দেন তিনি। তবে টাকার অঙ্ক স্পষ্ট দেখা যায়নি। ১ মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, আরেকজন ৫০০ টাকার নোট দিচ্ছেন মাসুদকে। ভিডিওতে থাকা দুই ঠিকাদারের পরিচয় জানা যায়নি। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মাসুদুল ইসলামের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনজন ঠিকাদার বলেন, বিলের চেক নিতে গেলে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি সিটি করপোরেশনে অনেকটা স্বাভাবিক বিষয়। চেকে টাকার অঙ্ক কম হলে ৫০০ টাকা দিতে হয়, অঙ্ক বেশি হলে ঘুষের পরিমাণও বেড়ে যায়।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁকে ভিডিওটি একজন পাঠিয়েছেন। তিনি দেখেছেন। ঘুষ নেওয়া অন্যায়। পরবর্তী কার্যদিবসে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।