শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতি-সংক্রান্ত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলস্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
আইনমন্ত্রী আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছান। এ সময় সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকেরা জানতে চান, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না। জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ওনাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’ শতাধিক নোবেলজয়ীদের ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে, এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
এর পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাঁকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’
‘অপরাধ করে থাকলে জেলে যেতে হবে’
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে আমার মামলার বিচার শুরু হয়েছে। আমার ধারণা, এক-দেড় মাসের মধ্যে হয়তো আমাকেও জেলে যেতে হতে পারে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ আশঙ্কার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আজ আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওনাকে (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) কেন জেলে যেতে হবে, এটা আমি জানি না। যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে জেলে যেতে হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইনে কোনো সুযোগ নেই।
এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফাসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।