মারধরের চার দিন পর ‘দলীয় কর্মীদের’ ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ কর্মী খুন
সিলেটে ছুরিকাঘাতে আরিফ আহমদ (১৯) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নিজ দলের প্রতিপক্ষের কর্মীরা তাঁকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে নগরের বালুচর টিবি গেট এলাকায় আরিফ ছুরিকাহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
আরিফ আহমদ বালুচর এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। তিনি টিলাগড় এলাকার স্টেইট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। আরিফ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের সঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তবে তাঁর কোনো পদ-পদবি নেই।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১২টার দিকে বালুচর টিবি গেট এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে কয়েক যুবক আরিফকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। এ সময় আরিফের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। আরিফ খুনের খবর পেয়ে সোমবার মধ্যরাতে হাসপাতালে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলামসহ শতাধিক নেতা–কর্মী হাসপাতাল এলাকায় ছুটে আসেন।
নাজমুল ইসলাম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, একটি পক্ষ টিলাগড় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছিল। এর জেরে চার দিন আগে আরিফকে মারধর করা হয়েছিল। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে আরিফ। ওই হামলার ঘটনায় আরিফের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এর জেরেই সোমবার রাতে আরিফকে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়েছে।
নাজমুল ইসলামের অভিযোগ, আরিফকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদের পক্ষের কর্মীরা ছুরিকাঘাত করে খুন করেছেন। এর আগেও একই পক্ষের কর্মীরা তাঁকে মারধর করেছিলেন। এ ব্যাপারে গতকাল রাতে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিরণ মাহমুদের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে ফোন দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাজমুল ইসলাম বলেন, টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় কোনো ছাত্রলীগ কর্মী তাঁর সঙ্গে রাজনীতি করুক, সেটি চান না সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ। তিনি ওই এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করতে চান। এ জন্য বারবার নাজমুলের পক্ষের নেতা-কর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন। আরিফ খুনের ঘটনায় হামলাকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দেওয়া হচ্ছে।
সিলেটের শাহপরাণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, যেখানে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে, ওই এলাকা সিলেট বিমানবন্দর এলাকাধীন। তবে নিহত যুবকের বাড়ি শাহপরাণ থানা এলাকায়। তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সিলেটের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈন উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।