উচ্ছ্বাসে শুরু গণিত উৎসবের চট্টগ্রাম পর্ব

পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু গণিত উৎসবের চট্টগ্রাম পর্বের অনুষ্ঠান। আজ সকাল ১০ টায় চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে। জুয়েল শীল।

সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কুয়াশার চাদর সরেনি তখনো। ঘড়ির কাঁটা সকাল আটটার ঘরে। শীতের এমন ঘুমজড়ানো সকালে শত শত শিক্ষার্থীর দেখা মিলল চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে। সেখানে বসেছে প্রাণের আয়োজন, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের চট্টগ্রাম পর্ব।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নগরের বায়েজিদে অবস্থিত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উৎসব শুরু হয়। তবে সকাল সাতটা থেকেই চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি থেকে শত শত শিক্ষার্থী উৎসব প্রাঙ্গণে আসতে থাকে। সকাল ৯টার মধ্যেই উৎসব প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণে।

অভিভাবকেরাও আসেন তাদের সঙ্গে। বৃষ্টিতে কেউ ছাতা নিয়ে, কেউবা ছাতা ছাড়াই উৎসবে আসেন। তবে কারও মধ্যে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। নবম শ্রেণিপড়ুয়া অনাবিল চাকমা এসেছে বান্দরবান থেকে। সঙ্গে ছিলেন বাবা জিকি চাকমা। জিকি চাকমা বলেন, উৎসবে অংশ নিতে গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁরা চট্টগ্রাম নগরে আসেন। এ ধরনের উৎসবে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে সন্তানের গণিত ভীতি কাটাতে চান এ বাবা।

দীঘিনালা সরকারি কলেজের শিক্ষক তপন কুমার ধর এসেছেন ছেলে অভিক ধরকে নিয়ে। তপন কুমার ধর বলেন, এ এক প্রাণের উৎসব। প্রতিবছর তাঁর অনেক শিক্ষার্থীই গণিত উৎসবে অংশ নেয়। তাঁর ছেলেও বেশ কয়েকবার অংশ নিয়েছে।

রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা মুছা কলিমুল্লাহ এসেছেন তাঁর ছেলে সাজিদ মাহাদিকে নিয়ে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মাহাদি জানাল, গত বছরও সে উৎসবে এসেছিল। শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কিছু জেনেছে। এবারও সে উচ্ছ্বসিত। পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসব শুরু হওয়ার কথা থাকলে বৃষ্টি তাতে বাগড়া দেয়। তবে এক ঘণ্টার গণিত পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন।

কনকনে শীত উপেক্ষা করে সন্তানকে নিয়ে গণিত উৎসবে আসেন অভিভাবকেরা। আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে।
জুয়েল শীল

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গণিত উৎসবের এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। আয়োজনে সহযোগিতা করছে প্রথম আলো চট্টগ্রাম বন্ধুসভা। উৎসবে প্রথমা, রকমারি, ল্যাব বাংলা, বিজ্ঞান বাক্স, তাম্রলিপি, দ্বিমিক প্রকাশনীর স্টল বসেছে। সেসব স্টল ঘুরে দেখেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। কিনে নেন পছন্দের বই। প্রথমার স্টল থেকে সন্তানের জন্য বই কিনছিলেন সাবরিনা সুলতানা। আলাপে জানালেন, তাঁর ছেলে সাঈদুল ইসলাম অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। গণিতে কিছুটা ভয় আছে। তবে গণিত নিয়ে ছেলের আগ্রহও বেশ। এ কারণে বেশ কিছু বই কিনেছেন।

এদিকে সকাল ১০টা থেকে কলেজের বিভিন্ন কক্ষে গণিতের পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার পর বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর থাকবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব। পাশাপাশি চলবে খাতা মূল্যায়নের কাজ। পরে ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।