জোড়া লাগানো শরীর নিয়ে জন্ম ফাতেমা ও জান্নাতের
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের পূর্ব চরপাড়া গ্রামের আল আমিন ও ফরিদা বেগম দম্পতির যমজ মেয়েসন্তান হয়েছে ৩ জুলাই। আনন্দের বদলে পরিবারে এখন দুশ্চিন্তা। ফাতেমা ও জান্নাত নামের দুই মেয়ের বুক ও পেট পরস্পরের সঙ্গে লাগানো। চিকিৎসক নবজাতক দুটিকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বললেও তাঁদের কাছে কোনো টাকা নেই।
আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে পূর্ব চরপাড়া গ্রামে আল আমিন ও ফরিদা দম্পতির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কৌতূহলী মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেছেন।
নবজাতকদের মা ফরিদা বেগম বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ ফাতেমা ও জান্নাতকে দেখতে আসেন। ভালো লাগে না। জন্মের পর মেয়েদের বুকের দুধ পান করাতে না পেরে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছেন তিনি। দুই মেয়ের শরীরের সামনের অংশ এমনভাবে জোড়া লাগানো যে বুকের দুধ খাওয়ানো যায় না।
নবজাতকদের বাবা আল আমিন বলেন, তাঁরা গাজীপুরে পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সাত বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে আছে তাঁদের। জোড়া লাগানো দুই মেয়ের জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। এখন তাঁর কাছে কোনো টাকা নেই। জন্মের পরই মেয়েদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ৯ দিন চিকিৎসার পর নবজাতকদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে হাসপাতাল থেকে বিদায় দেওয়া হয়। কিন্তু টাকার অভাবে আল আমিন ও ফরিদা দম্পতি নবজাতকদের বাড়িতেই রেখেছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর মনে হয়েছে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতক দুটিকে পৃথক করার অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ সুযোগ আছে। কাজেই সেখানে পাঠানো হয়েছে। দুই নবজাতকের হার্ট ও লিভার একটি হওয়ায় অস্ত্রোপচার জটিল হতে পারে।
ফরিদা বেগমের অস্ত্রোপচার করেন বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নিবেদিতা রায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শুধু চামড়া জোড়া লাগানো হলে অস্ত্রোপচার সহজ হতো। কিন্তু শিশু দুটির হার্ট জোড়া লাগানো থাকার কারণে বিষয়টি জটিল।