নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমানসহ ৮৯ জনের নামে আরও দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৮৯ জনের বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের আরও ৫০০ নেতা-কর্মীকে।
গত বুধবার রাতে আবদুর রশিদ ও জসিম খান নামের দুই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ মডেল থানায় পৃথক মামলা করেন। তাঁরা সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার পৃথক এলাকার বাসিন্দা। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, আবদুর রশিদের মামলায় শামীম ওসমানসহ ৪১ জন এবং জসিম খানের মামলায় ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় ২২টি হত্যাসহ মোট ৩০টি মামলা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৭টি হত্যাসহ ১৮ মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
নতুন দুই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বাদী আবদুর রশিদ জানান, গত ২১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় বাদী আবদুর রশিদসহ অন্যরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ সময় শামীম ওসমানের নির্দেশে তাঁদের দলীয় সন্ত্রাসীরা বাদীসহ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা শুরু করে। কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির পর ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ও নিরীহ জনতা গুলিবিদ্ধ হন। এর একপর্যায়ে মামলার বাদী ডান হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অন্য মামলার বাদী জসিম খান এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২০ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ভূমিপল্লীর সামনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন বাদী জসিমসহ অন্যরা। এ সময় আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ককটেল, দেশীয় অস্ত্রসহ ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। আসামিরা ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। আসামি শামীম ওসমান ও শাহ নিজামসহ অন্যেরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীসহ অন্য আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য গুলি বর্ষণ করে। এ সময় দৌড়ে পালানোর সময় বাদীর বাঁ হাতে একটি গুলি লাগে। পরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হন তিনি।