সর্বোচ্চ ৬৩, সর্বনিম্ন ৬ শতাংশ ভোট পড়েছে

মানিকগঞ্জ-২ আসনে ভোট প্রদানের হার ৪২ দশমিক ৭০, মানিকগঞ্জ-১ আসনে ২৯ দশমিক ৯৮ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ৩৯ দশমিক ৫১।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে সিঙ্গাইর উপজেলার নয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার সর্বোচ্চ। এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর ভোট প্রদানের হার সর্বনিম্ন একই উপজেলার পশ্চিম গোবিন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে, ৬ দশমিক ৮। এ ভোটকেন্দ্রও মানিকগঞ্জ-২ আসনে সিঙ্গাইর উপজেলায়।

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে কেন্দ্রওয়ারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারি জেলায় তিনটি আসনে ৫১৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি আসনের মধ্যে মানিকগঞ্জ-২ আসনে ভোট প্রদানের হার সব থেকে বেশি, ৪২ দশমিক ৭০। এ ছাড়া ভোট প্রদানের হার মানিকগঞ্জ-১ আসনে ২৯ দশমিক ৯৮ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ৩৯ দশমিক ৫১।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একটিতে ও বাকি দুটিতে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

মানিকগঞ্জ-১ আসন

মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯৭ জন। এ আসনে ১৮০টি ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫২৪টি। শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার সর্বনিম্ন, ১৩ দশমিক শূন্য ৮। এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩৮৯টি। আর দৌলতপুর উপজেলার চকহরিচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার সর্বোচ্চ, ৬৪ দশমিক শূন্য ৬। এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৩৭৮টি।

এই আসনে চারজন প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মো. জহিরুল আলমের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। ঈগল প্রতীকে সালাউদ্দিন মাহমুদ পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৯৪১ ভোট এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকে জহিরুল আমল পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৪২টি ভোট।

মানিকগঞ্জ-২ আসন

মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর-হরিরামপুর-সদরের একাংশ) আসনের সিঙ্গাইর উপজেলার নয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার সর্বোচ্চ, ৬৩ দশমিক ১৭। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৪৫৮ এবং ভোট পড়েছে ৯২১টি। আর পশ্চিম গোবিন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার সর্বনিম্ন, ৬ দশমিক ৮। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ১৪৭ জন এবং ভোট পড়েছে ২১৪টি।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৯ জন। ১৯৩টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২টি। নির্বাচনে এ আসনে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ ট্রাক প্রতীকে ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মমতাজ বেগম নৌকা প্রতীকে ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট পেয়ে হেরে যান। এই আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৯ জন এবং ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২। এই আসনে ভোটের হার ৪২ দশমিক ১০। এদিকে জেলার অন্য দুটি আসনের থেকে এই আসনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকায় ভোটার উপস্থিতর হার কিছুটা বেশি ছিল।

৭ জানুয়ারি নির্বাচনে দিন পশ্চিম গোবিন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রঞ্জন মিস্ত্রি বলেন, এই কেন্দ্রে সকাল ১০টায় ৪৪টি, দুপুর ১২টায় ৮৫টি, বেলা ২টায় ১২০টি ও বিকেল ৪টায় ২১৪টি ভোট পড়ে।

মানিকগঞ্জ-৩ আসন

মানিকগঞ্জ-৩ (সাটুরিয়া-মানিকগঞ্জ পৌর এলাকা-সদরের একাংশ) আসনে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯৭ জন ভোটার। এ আসনে ১৪৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৫৯টি। মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় মানিকগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৭৪। এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২ হাজার ২৩৫টি। আর সাটুরিয়া উপজেলায় উমানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার সর্বোচ্চ ৫৯ দশমিক ৪৩। এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২ হাজার ৮৫৪টি।

এই আসনে ছয়জন প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭২০ ভোট এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে মফিজুল ইসলা খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৯১ ভোট।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান মিঞা বলেন, নির্বাচন শেষে ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্টদের ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো গোলযোগও হয়নি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।