লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নুরুল ইসলাম (৬০) নামের একজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও থানা-পুলিশ ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে।
নিহত নুরুল ইসলাম গোড়ল ইউনিয়নের মালগাড়া গ্রামের মৃত নঈম উদ্দিন মুনসীর ছেলে। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে, চার মেয়ে ও নাতি-নাতনি রয়েছে।
বিজিবি, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নুরুল ইসলাম ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দলের সঙ্গে গতকাল গভীর রাতে স্থানীয় লোহাকুচি সীমান্তের ৯১৯ মেইন পিলার এলাকায় চোরাচালানের মাধ্যমে আসা ভারতীয় গরু আনতে গিয়েছিলেন। নুরুল গরু চোরাচালানের কাজে রাখালের কাজ করছিলেন। এ সময় ২ থেকে ৩টি গরু এভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসার পর পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার ৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গুনজরির চওড়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে নুরুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় নুরুল ইসলামের সঙ্গীরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে নুরুল ইসলাম এ সময় মারা যান। সঙ্গীরা তাঁর লাশটি লোহাকুচি সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের একটি পাটখেতে ফেলে চলে যান।
এদিকে লোহাকুচি সীমান্ত এলাকায় গভীর রাতে গুলির শব্দ শুনে লোহাকুচি বিওপি ক্যাম্পের বিজিবির টহল দলের সদস্যরা অনুসন্ধান করে গতকাল দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে নুরুল ইসলামের লাশের সন্ধান পান। সংবাদ পেয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের থানা-পুলিশ আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নুরুল ইসলামের লাশ থানায় নিয়ে আসে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নুরুল ইসলামের ডান কানের লতির ওপর দিকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকাল ১০টার দিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চোরাই পথে ভারত থেকে গরু পাচার করতে গিয়ে এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে আটক বা গ্রেপ্তার না করে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ করা হয়েছে বিএসএফের কাছে।